এম এইচ,শাহজাহান আকন্দ ;দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
নির্যাতন আর মারধরের ঘটনায় কান্না থামছে না এখন বিধবা রেখা রানীর। ধর্মান্তরিত হওয়া এক ভাইয়ের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে অভিযোগ একঘর সংখ্যালঘু পরিবারের। থানায় অভিযোগ করেও নেই কোনও প্রতিকার। পুলিশ বলছে স্থানীয়রা আপোষে মীমাংসা করে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন স্থানীয়রা। সংখ্যালঘু পরিবারের দাবি, এমন অনেক সালিশ বিচার হয়েছে কিন্তু আমরা সঠিক বিচার পায়নি। জাফর খান স্থানীয় প্রভাবশালীদের সেল্টারে থাকেন।
সম্প্রতি উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের বোগলাবাজার গ্রামের প্রয়াত দীনবন্ধু বর্মনের স্ত্রী রেখা রানী ও তাঁর মেয়ে স্কুল শিক্ষিকা দীপা রানীকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ সূ্রে জানা যায়, ধর্মান্তরিত জাফর খানের সঙ্গে পৈতৃক সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে একই পরিবারে প্রয়াত দীনবন্ধু বর্মনের স্ত্রী রেখা রানী বর্মনের। এরই জেরে গত শুক্রবার সকালে জাফর খান বিরোধীয় জমিতে জোরপূর্বক গাছ কাটতে গেলে বাঁধা দেন রেখা রানী এবং তার মেয়ে বোগলাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রিপা রানী। এ ঘটনায় জাফর খান তাদের উপর চড়াও হন এবং মা মেয়েকে বেধড়ক মারপিট করেন। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে দোয়ারাবাজার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রেখা রানী দাস।
সরজমিন গেলে বিধবা রেখা রানী কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে জাফর খান আমাদের ভিটেছাড়া করার জন্য উঠেপড়ে লাগে। ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছে। প্রকাশ্যে আমাদের মারধর এবং অত্যচার নির্যাতন করলেও কেউ আমাদের রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। আমাকে এবং আমার গর্ভবর্তী মেয়েকে বেধড়ক মারধর করে এখনও সে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
শিক্ষিকা রিপা রানী বলেন, জাফর খান বিরোধীয় সম্পত্তিতে জোরপূর্বক গাছ কাটতে গেলে আমার বাঁধা দেন। ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমাদের বেধড়ক মারপিট শুরু করেন। এসময় সুর চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এসে আমাদের উদ্ধার করেন। টানাহেঁচড়ার সময় আমার ব্যবহৃত স্মার্টফোনটি তিনি নিয়ে যান। স্থানীয় সালিশে বিষয়টি দেখে দেওয়ার কথা বলায় জাফর খান এখন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। মা মেয়েকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, জাফর খান আমাদের ধর্মত্যাগ করে চলে যাওয়ার পর থেকে আমাদের ওপর অকথ্য অত্যচার নির্যাতন করে আসছেন। মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে আমাদের নিঃস্ব করার চেষ্টা করছেন। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এর বিচার চাই।
মুঠোফোনে জাফর খান বলেন, আমার কেনা সম্পত্তিতে গাছ কাটতে গেলে মা মেয়ে বাধা দেয়। কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেনি। সাংবাদিক পুলিশ এনে যা পারে তারা করুক।
জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর বলেন, শিক্ষিকা এবং তাঁর মাকে মারধরের ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আপোষ মীমাংসায় সমাধান করে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। না হলে আমরা আইনী ব্যবস্থাই নেব।
শেয়ার করুন