অভয়নগরে সহকারি মেডিকেল অফিসারের বিরুদ্ধে ঔষধ বিক্রি-সহ নানা অভিযোগ

জাতীয়

কাজী মোহাম্মদ আলী,অভয়নগরঃ

যশোরের অভয়নগর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ- সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আবু সাঈদের বিরুদ্ধে সরকারি ঔষধ বিক্রি, সঠিক সময় কর্মক্ষেত্রে না আসা সহ সেবা প্রদানে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় একাধিক এলাকাবাসী জানান, ১৯৯১ সালে ১৮ টি গ্রামের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠিত হয় বাঘুটিয়া ইউনিয়নের পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। সাধারন মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য এখানে সরকারি ভাবে ২২ রকম ঔষধ সরবরাহ করা হয়। তবে ঔষধ গুলো সেবা নিতে আসা মানুষদের না দিয়ে চিকিৎসক সাঈদ নিজ চেম্বারে ব্যক্তিগত চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের কাছে বিক্রি করেন। তাছাড়া তিনি সঠিক সময়ে নিজ কর্মক্ষেত্রে আসেন না।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৈশ্বিক পরিস্তিতির কারণে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৮টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত রোগী দেখার বিধান থাকলেও তিনি সকাল ১১ টার দিকে কর্মক্ষেত্রে আসেন আবার জোহরের আজান দিলে ক্লিনিক বন্ধ করে চলে যান। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কর্মস্থানে থাকার কথা থাকলেও তিনি সেখানে থাকেন না।
বাঘুটিয়া বাইতুল আমান জামে মসজিদের ঈমাম মো: আব্দুল হালিম মোল্যা জানান, এখানে পর্যাপ্ত ঔষধ আছে জেনে কয়েকদিন আগে আমি ঠান্ডা জ্বরের চিকিৎসা নিতে যাই। কিন্তু ডা. সাঈদ আমাকে কোন ঔষদ না দিয়ে একটি প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়ে বাইরে থেকে ঔষধ কিনে নিতে বলে।
বাঘুটিয়া কলনিপাড়া এলাকার ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘ডা. সাঈদ অফিসে আসে ১১ টার সময় আর জোহরের আজান দিলে চলে য়ান। তিনি আরো বলেন, আমি মাজায় ব্যাথা নিয়ে বেশ কয়েক দিন ডাক্তার সাহেবের কাছে যাই কিন্তু ডাক্তার আমাকে কোন ঔষধ না দিয়ে শুধু প্রেসক্রিপশন লিখে দেয়।’ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে অবস্থিত একটি কাওমি মাদ্রাসা কয়েকজন শিশু শিক্ষার্থী জানায়, তাদের ঠান্ডা জ্বর চুলকানি সমস্য নিয়ে তারা ডা. আবু সাঈদের কাছে যায়। ডাক্তার তাদের কোন চিকিৎসা না দিয়ে বাইরে থেকে চিকিৎসা করার কথা বলে তাড়িয়ে দেয়।
এ বিষয়ে ডাঃ আবু সাঈদ কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। কর্মস্থলে থাকবার বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে সব সময় না তাকলেও কিছু কিছু দিন থাকি।

এবিষয়ে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক এস.এম. ফরিদ আহম্মেদ বলেন, ডাঃ আবু সাঈদ আগে এখানে থাকতেন এখন থাকেন না। আর পর্যাপ্ত ঔষুদ না থাকায় সে দিতে ব্যর্থ হন।

এবিষয়ে অবহিত করতে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: ওহিদুজ্জামানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। পরে যশোর জেলা পরিবার পরিকল্পনা উপপরিচালক কাজী ফারুক আহমেদ জানান, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ- সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের কর্মস্থানে থাকার কথা । এ বিষয়ে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *