আজ ১৮ সেপ্টেম্বর কৃষ্ণপুর গণহত্যা দিবস

জাতীয়

এম ইয়াকুব হাসান অন্তর,
হবিগনজ প্রতিনিধিঃ

১৯৭১ সালের এই দিনে লাখাইর কৃষ্ণপুর গ্রামে ভয়াবহতম গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল। ১৯৭১ সালের এ দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বী গ্রাম কৃষ্ণপুর,গদাইনগর,চণ্ডীপুর গ্রামে পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার বাহিনী নির্মম হত্যাযঞ্জ চালায়।এই দিনে পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা দিনব্যাপী নারকীয় তাণ্ডব চালায়।অষ্টগ্রাম সেনা ক্যাম্পের ১০/১২ জন সেনা ও তাদের দোসর রাজাকার সদস্যরা ঐদিন ভোরের আলো ফুটতে ফুটতেই ২ টি স্পীড বোট ও ২টি পানসি নৌকাযোগে বলভদ্র নদ পরিবেষ্টিত গ্রাম কৃষ্ণপুর,গদাইনগর, চণ্ডীপুর গ্রাম চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে।পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের সকল অপকর্মের দোসর রাজাকারা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রামগুলো ঘেরাও করে গ্রাম থেকে বের থেকে বের হওয়ার সকল পথ বন্ধ করে দেন।পরবর্তী তে তারা গ্রামবাসী কোন কিছু বুঝে উঠার পূর্বেই প্রতিটি ঘরে তল্লাসি চালিয়ে লোকজনকে ধরে এনে কৃষ্ণপুর গ্রামের শহীদ ননী গোপাল রায়ের বাড়ীর পুকুর সংলগ্ন ঘাটলার ফাঁকা জায়গায়,গদাইনগর এর চিত্তরন্জন দাসের বাড়ীর উঠানে এবং চণ্ডীপুর গ্রামের একটি জায়গায় জড়োকরে ১২৭ জন মতান্তরে ১৩১ জনকে ব্রাশ ফায়ারে নির্মম ভাবে হত্যা করে।সৌভাগ্যক্রমে লাইনে দাড়ানো কৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত কৃষ্ণ মোহন রায়ের পুত্র হরিদাস রায় বেঁচে যায়।এদিকে হানাদার বাহিনীর উপস্থিতি টের গ্রামের লোকজন প্রান বাঁচাতে যে যেভাবে পারে পালিয়ে যেতে থাকে।কেউবা গ্রামের পুকুরের কচুরি পানায় আশ্রয় নেয় আবার কেউবা পাশের ধানের জমিতে সাঁতার দিয়ে চলে যায়।পাকবাহিনী দিনব্যাপী হত্যাযঞ্জ, লুটতরাজ ও অগ্নি সংযোগ করে গ্রামগুলোকে বিরান ভূমিতে পরিনত করে বিকেল ৫ টার দিকে চলে যায়।পাকবাহিনী চলে যাওয়ার পর যারা বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছিল তারা গ্রামে ফিরে এসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লাশ মিছিল দেখে হতভম্ভ হয়ে যায়।তারা কিছু লাশ স্থানীয় শ্মশানঘাটে দাহ করে।বাকী লাশগুলো বর্তমান বধ্যভূমি নামক স্থানে জড় করে রেখে দেয়।এরই মধ্যে অনেক লাশ বলভদ্র নদে ভেসে যেতে দেখেছেন বলে জানান প্রত্যদর্শীরা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *