আব্দুল জব্বারের নাম সিলেটের ইতিহাস থেকে কোনদিনই মুছে ফেলা যাবে না- মাহবুব আলী

মৌলভীবাজার

ঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর আব্দুল জব্বারদের নামও সিলেটের ইতিহাস থেকে কোনদিনই মুছে ফেলা যাবে না— প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এমপি বলেছেন,‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যারা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিল তারাই আবার বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ১৯৭৫ পরবর্তী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ গড়ার কাজ করেছিল এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অবিচল থেকে আবারো নেত্রীকে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনার পিছনে যারা কাজ করেছিলেন তাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার ছিলেন অন্যতম।’

আজ রবিবার বিকেল ৪টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস এবং জাতির পিতার স্নেহধন্য একুশে পদক প্রাপ্ত সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বারের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভাটির আয়োজন করা হয়।
মাহবুব আলী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৫ বছর যাবৎ ধারাবাহিক সুশাসনের ফলে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। দেশ আজ খাদ্য ও বিদুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহ সারাদেশে।

মেগা প্রজেক্টের মধ্যে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রো রেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়েসহ একের পর এক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। আগামী ৭ অক্টোবর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।’

তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যে নির্মম ঘটনা ঘটেছিল, যারা ভেবেছিল একসময় যে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে এই বাংলাদেশে আর কোনোদিন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জেগে উঠবে না। আওয়ামী লীগের নাম নিশানা কোনোদিনই থাকবে না কিন্তু তারা ভুল ভেবেছে।

তারা জানে নাই যে, আব্দুল জব্বারের মতো এই দেশের অগণিত মানুষ বঙ্গবন্ধুর সাহচর্য পেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তারা এ দেশে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেছে, মাত্র ৯ মাসে তারা বিশ্বের একটি অন্যতম পরাক্রমশালী সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করে এই দেশ স্বাধীন করেছে।’

বঙ্গবন্ধুর নাম কোনোদিনই মুছে ফেলা যাবে না উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে ভাসছে ঠিক তখন নতুন ভাবে বিএনপি-জামায়াত নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। যাতে এ দেশের উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হয়। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তারই কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসব অশুভ শক্তিকে মোকাবেলা করে আগামী নির্বাচনেও এ সরকারকে রাষ্ট্রক্ষমতায় রেখে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রাখতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যতদিন এই দেশ থাকবে, যতদিন মুক্তিযুদ্ধ থাকবে, যতদিন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ আমাদের বুকে লালিত হবে ততদিন বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে মুছা যাবে না। ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর আব্দুল জব্বারদের নামও সিলেটের ইতিহাস থেকে কোনদিনই মুছে ফেলা যাবে না।

আব্দুল জব্বারের উত্তরসূরিরা প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রক্ষমতায় রাখতে একইভাবে কাজ করে যাবেন।’

এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কমলগঞ্জের শমশেরনগর বিমানবন্দরসহ বন্ধ থাকা দেশের সকল বিমানবন্দর পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে।’

আব্দুল জব্বার ফাউন্ডেশনের আয়োজনে স্মরণসভায় প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ ও মরহুম আব্দুল জব্বারের পুত্র মো. আবু জাফর রাজুর সভাপতিত্বে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসম কামরুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, অলিলা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান সাহেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অরবিন্দু ঘোষ বিন্দু ও শফিউল আলম শফি, সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম বদর, মমদুদ হোসেন, বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান ফজলুল হক ফজলু, কমর্ধা ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম সবুজ, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আখই, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এনামুল হক মিফতা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মরহুম আব্দুল জব্বারসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল সদস্যসহ দেশের মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *