স্বীকৃতি বিশ্বাস, স্টাফ রিপোর্টারঃ
উদীচী যশোর কোমলমতি খুদে শিক্ষার্থীদের প্রাচীন ঐতিহ্যের তালপাতায় লিখে হাতেখড়ির আয়োজন করে।
আজ শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে যশোর পৌর উদ্যানে বসেছিল ঐতিহ্যবাহী হাতেখড়ি উৎসবের। চলমান শৈত্য প্রবাহ উপেক্ষা করে ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবে অভিভাবকগণ ২শতের অধিক ক্ষুদে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসেন এবং স্বস্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শিশুদের হাত ধরে তালাপাতার উপর লিখে তাদের বিদ্যা অর্জনের শুভ সূচনা করেন।
জাতীয় সংগীত ও উদীচীর গণসংগীতের মাধ্যমে হাতেখড়ি উৎসবশুরু হয়।
উদীচী যশোরের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পৌর মেয়র হায়দার গণী খান পলাশ, উদীচী যশোরের অন্যতম উপদেষ্টা ও দৈনিক কল্যাণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা একরাম উদ দ্দৌলা, গ্রামের কাগজের সম্পাদক মোবিনুল ইসলাম মবিন, অক্ষর শিশু শিক্ষালয়ের অধ্যক্ষ শৈলেশ কুমার রায়।
উদীচী যশোরের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লবের স্বাগত বক্তব্যের পর প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন-স্কুল জীবনে জ্ঞানার্জনের শুরুতে সার্বজনীন এমন আয়োজন উপস্থিত কোমলমতি শিশুদের অনুপ্রাণিত করবে। অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, স্কুল জীবন শিক্ষাজীবন যেন বোঝা না হয় সেদিকে অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে। এ শিক্ষায় মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলতে শিশুদের শিশুর মতো বড় হতে দিন। তিনি বলেন, সব কিছুতে প্রথম হতে হবে এমন মানসিক চাপ দিয়ে বড় করে তোলার প্রয়াস শিশুদের সুকুমার প্রবৃত্তি প্রকাশ বাধাগ্রস্ত হয়, যা কোনো অভিভাবকের কাম্য হতে পারে না। তিনি শিক্ষার শুরুতে শিশুদের নিয়ে এমন আয়োজন করায় উদীচীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
চলমান শৈত্য প্রবাহ উপেক্ষা করে আজকের এ হাতেখড়ি উৎসবে অভিভাবক, সমাজের গণ্যমান্যব্যক্তিবর্গসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার পাঁচ শতাধিক উপস্থিত ছিলেন।
অভিভাবকদের প্রত্যাশা ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা আলোকিত মানুষের হাত ধরেই শিক্ষা জীবন শুরু করে আলোকিত মানুষের ন্যায় জীবন গড়ার প্রত্যয় নিয়ে শিশুরা ভবিষ্যতে এগিয়ে যাবে।
২০১১ সাল থেকে উদীচী যশোরের উদ্যোগে হাতেখড়ি উৎসবের আয়োজন হয়ে আসছে। উৎসবে উদীচী যশোর পরিচালিত অক্ষর শিশু শিক্ষালয়ের নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীসহ ব্যাপ্টিস্ট চার্চ বিদ্যালয়, প্রগতি বিদ্যালয়, ওয়াইডাব্লিউসিএ নার্সারী স্কুল, সেঞ্চুরি প্রি ক্যাডেট স্কুল ও মৌমাছি স্কুলের ২ শতাধিক শিক্ষার্থী হাতে খড়ি নেয়।
উল্লেখ্য হাজার বছরের ঐতিহ্য আমাদের হাতেখড়ি অনুষ্ঠানের। বাদশাহ আকবরের আমলেও মুসলমানদের মধ্যে এই অনুষ্ঠানের প্রচলন ছিল।যার নাম ছিল‘তাক্তি’।শ্লেট আর খড়িমাটি ছিল হাতেখড়ির প্রধান অনুষঙ্গ। উদীচীর আজকের এ আয়োজনের মাধ্যমে হাতে খড়ির অনুষ্ঠান শহরে মানুষের স্মৃতির পাতায় অমর হয়ে থাকবে।
শেয়ার করুন