এই ‘ডামি সরকার’ ওয়ান-ইলেভেনের ধারাবাহিকতা মাত্র: রিজভী

জাতীয়

বর্তমান সরকারকে ওয়ান-ইলেভেনের ধারাবাহিকতা হিসেবে মন্তব্য করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বাংলাদেশে রাজনীতির ইতিহাসে ডামি প্রার্থী, ডামি ভোটার, ডামি এজেন্ট, ডামি পর্যবেক্ষক, ডামি ফলাফল, ডামি এমপি, ডামি শপথের মধ্য দিয়ে ওয়ান ইলেভেনের কৃষ্ণতম দিবসে একদলীয় ফ্যাসিবাদের হুংকারে আরও একটি কৃষ্ণতম মেকি সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে।’

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘ভুয়া ভোট শেষ হতে না হতেই নিশিরাতের সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই গেজেট জারি, তড়িঘড়ি শপথ এবং নজিরবিহীন দ্রুততায় সরকার গঠনের ঘটনা প্রমাণ করে যে, এক অজানা ভীতি ও আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে তাদের। সবকিছু অবৈধ, ভুয়া আর জালিয়াতির আবর্তে তাসের ঘরের ওপর সিংহাসন পাতলে এমন নির্ঘুম অনিশ্চয়তা আতংকে জীবন পতিত হয়।’

দেশের জনগণ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে জড়িত প্রক্রিয়া, ব্যক্তি, ফলাফল, শপথ, সংসদ, সরকার সবকিছুই প্রত্যাখ্যাত, অগ্রহণযোগ্য। ৭ জানুয়ারি তথাকথিত নির্বাচনটি ছিল গণতন্ত্রকামী জনগণের আন্দোলনের পক্ষে এবং ডামি নির্বাচন বর্জনের পক্ষে একটি সুস্পষ্ট গণরায়।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘এই ডামি সরকার ওয়ান ইলেভেনের ধারাবাহিকতা মাত্র। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির এই দিনে গভীর ষড়যন্ত্রের নীলনকশার মাধ্যমে দেশটাকে প্রভুদের করদ রাজ্যে পরিণত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আবারও সেই একই দিনে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করল ডামি ভোটের অসাংবিধানিক, প্রভুদের আজ্ঞাবাহী হাসিনার সরকার। দেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র তারা সফল করল।’

রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা গতবার রাতে ভোট হওয়ার স্বীকারোক্তি দিয়ে ‘এবার দিনের ভোট রাতে হয়েছে বলার ক্ষমতা নেই’ বলে তাদের দলের অভ্যন্তরীণ বিবাদ—গৃহদাহ নিরসন করতে চাইলেও ব্যর্থ হচ্ছেন। এবার যে নির্বাচনের নামে ভোট ডাকাতি হয়েছে তা নিজেরাই সংবাদ সম্মেলন করে তুলে ধরছেন। এতদিন দেশের জনগণ বলেছে, আমরা বলেছি। আর এখন তারা নিজেরাই গত তিনটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির সমস্ত প্রক্রিয়ার কথা বলছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংসদে বিদ্যুৎ বিক্রি করা এক গানের শিল্পী বলেছেন, মৃত মানুষ বিদেশে আছে তাদের ভোটও দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপ বলেছেন, নির্বাচনে অলৌকিক শক্তি কাজ করায় ভোটে কারচুপি হয়েছে, একচেটিয়া ভোট ডাকাতি হয়েছে। বরগুনা—১ আসনের আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেছেন, ভোটের ফল একহাতে তৈরি করা হয়েছে। একজন বলেছেন, গণভবন থেকে ফলাফল এসেছে। পরাজিত কুইন্সপার্টির এক নেতা বলেছেন, শেখ হাসিনা তামাশার নাটক করেছেন। তার ক্ষমতায় থাকার লিপ্সা পূর্ন করতে আমাদের সিঁড়ি বানিয়ে এখন ছুড়ে ফেলেছেন। কাকে কত টাকা দিয়ে নির্বাচনে নেওয়া হয়েছে তা প্রকাশ্যে হিসাব দিচ্ছেন পরাজিত প্রার্থীরা।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *