করোনা মহামারী পরবর্তী সময়ে অষ্টম ও নবম শ্রেণির ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর প্রাইভেট টিউটর বা কোচিংয়ে নির্ভরতা বেড়েছে। বাণিজ্যিক গাইড বই অনুসরণ করেছে প্রায় ৮২ শতাংশ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী। গতকাল শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে, গণসাক্ষরতা অভিযানের আয়োজিত ‘মহামারি উত্তর শিক্ষা ব্যবস্থা’ নিয়ে একটি গবেষণার ফল প্রকাশ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
করোনাকালে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় দেড় বছর বন্ধ ছিল সরাসরি পাঠদান। এতে লেখাপড়ার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে- বলছেন বিশেষজ্ঞরা। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এডুকেশন ওয়াচের শিক্ষা জরিপে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেড়েছে প্রাইভেট টিউটর বা কোচিংয়ে নির্ভরতা।
২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা এ গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, করোনা মহামারি পরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রমে অষ্টম ও নবম শ্রেণির ৮৫.১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর কোচিংয়ে নির্ভরতা বেশি ছিল। এতে করে গড়ে প্রতি মাসে ১,১০০ থেকে ৩,০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় বেড়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, ৭৯ শতাংশ প্রাথমিক এবং ৮২ শতাংশ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী তাদের পড়াশোনার জন্য বাণিজ্যিক গাইডবই অনুসরণ করেছে। ফলে, ২০২২ সালের প্রথম নয় মাসে প্রাথমিক পর্যায়ে গড়ে ৬৬৯ টাকা এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ২,০৬৫ টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে।
করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা ব্যবস্থার সুদূরপ্রসারী প্রভাব থাকবে বলে মনে করছেন শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, “আমরা খারাপের দিকে যেতে চাই না। আলোর দিকে যেতে চাই”।
এডুকেশন ওয়াচের সভাপতি কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, “বাংলাদেশে নীতির কোনো সংকট নেই। শিক্ষা হোক, স্বাস্থ্যসেবা হোক— ভালো নীতি আছে। সংকট হচ্ছে বাস্তবায়নে, এটি একেবারে সর্বক্ষেত্রে। বাস্তবায়নের কাজে যারা থাকেন, তারা সঠিকভাবে কাজ করেন না, সময়মতো করেন না। আর সুযোগ থাকলে নিজেদের পকেট একটু ভারী করার চেষ্টা করেন”।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বজনীন ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতের বিকল্প নেই। করোনা পরবর্তীকালে ভবিষ্যত শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন হবে তা নতুন করে ভাবার সময় এসেছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
শেয়ার করুন