সরকারি চাকরিতে অন্যায্য কোটাব্যবস্থা ছিল দেশের যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থীদের জন্য অভিশাপ। এ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রকাঠামোয় পর্যায়ক্রমে ভাঙনের শুরু হয়। কোটার যৌক্তিক সংস্কারের জন্য ব্যাপক আন্দোলন হয় ২০১৮ সালে। তোপের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার কোটা বাতিল করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ২০২৪-এর জুন মাসে সরকার এক অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত নেয়, হাইকোর্টকে পুতুলের মতো ব্যবহার করে বৈষম্যপূর্ণ কোটাপ্রথা পুনর্বহাল করে।
শুরু থেকেই আমরা কোটা পুনর্বহাল করার বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। আন্দোলন মোকাবিলায় সরকারের দিক থেকে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া আসতে পারে, তা পর্যালোচনা করে আমরা কৌশল গ্রহণ করি। সম্মুখ নেতৃত্বে কারা থাকল, তার চেয়েও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল দাবি আদায়।
চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ জুন থেকে ৩৬ জুলাই পর্যন্ত নীতিনির্ধারণ এবং মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ছাত্রশিবির জড়িত ছিল। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম, সাহিত্য সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন খান আন্দোলনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। কোন দিন কোন কর্মসূচি দেওয়া হবে, কৌশল কেমন হবে, সবকিছু নিয়েই সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, হাসনাত আবদুল্লাহ, মাহফুজ আলমদের সঙ্গে আলোচনা হতো।
জুলাই অভ্যুত্থানের বিশদ ঘটনা সংবাদপত্রের স্বল্প পরিসরে প্রকাশ সম্ভব নয়। তবুও স্মৃতিপট থেকে কিছু ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করব। শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ সাব্যস্ত করার মাধ্যমেই নিজের গদিচ্যুতি নিশ্চিত করেন স্বৈরাচারী হাসিনা। ১৪ জুলাই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশ ‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। কিন্তু ন্যূনতম অনুশোচনা বা দুঃখপ্রকাশ না করে স্বৈরাচারী হাসিনা তার পেটোয়া বাহিনী ছাত্রলীগকে শিক্ষার্থীদের ওপর লেলিয়ে দেন। ১৫ জুলাই ছাত্রদের স্বতঃস্ফূর্ত ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে পৈশাচিক হামলা চালায় ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে যুক্ত হয় এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।
হামলায় আহত ভাই-বোনদের শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল। তৎক্ষণাৎ ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়ে আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিতের ব্যাপারে সহযোগিতা করি। মনের মধ্যে তীব্র ক্রোধ জন্ম নেয়। সন্ধ্যায় মিছিল করতে চাই। কিন্তু ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী কম! সে জন্য শিবিরের ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন শাখার জনশক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে ছাত্রলীগ প্রতিরোধে এগিয়ে আসে। আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সমম্বয় করে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
পরদিন শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে সফল কর্মসূচি বাস্তবায়নেও ছাত্রশিবির ভালো অবস্থান নেয়। হল থেকে ছাত্রলীগকে বিতাড়িত ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিবিরের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের মোবিলাইজ ও তাদের পরিকল্পনা সাজাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
এবার আসা যাক ৯ দফার ব্যাপারে। সরকার কোটা বাতিল করলেও আমরা চেয়েছিলাম আন্দোলন চলমান রাখতে। এস এম ফরহাদ ও আমি এবং শিবিরের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান সদস্যরা মিলে ৯ দফা প্রস্তুত করি। ৯ দফা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম এবং ঢাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি মীর্জা গালিব, শরফুদ্দিন, আলী আহসান জুনায়েদ, সিবগাতুল্লাহ ও রাফে সালমান রিফাত।
৯ দফা প্রস্তুত করে সমন্বয়ক আবদুল কাদেরের সঙ্গে আলাপ করে এতে কিছু পরিবর্তন করা হয়। শিবিরের নেতাকর্মীরা কারফিউ উপেক্ষা করে মিডিয়া হাউসগুলোয় ৯ দফা প্রচার করেন।
আমাদের আন্দোলনের অন্যতম বড় উদ্যোগ ছিল প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের অংশগ্রহণ। তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা রামপুরা-বাড্ডায় প্রতিরোধ গড়ে তুলি। প্রাইভেট ভার্সিটির ছাত্ররা অকুতোভয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হলে বাকি সমন্বয়কদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা শঙ্কিত হয়ে পড়ি। তারা প্রত্যেকেই প্রাণভয়ে ছিলেন। সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরসহ আরও কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীর সহযোগিতায় তাদের জন্য সেইফ হোমের ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিদিন তাদের নামেই প্রেস রিলিজ সরবরাহ করা হতো যা চলমান আন্দোলনে বড় প্রভাব ফেলে।
আন্দোলন দমনে সারা দেশে গণহত্যা চালাতে থাকে ক্ষমতাসীন দলের গুণ্ডা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তখন প্রতিটি হাসপাতালে ঘুরে আহত এবং শহীদদের তালিকা প্রস্তুত করার কাজটি শুরু করে আমাদের একটি টিম। ২৬ জুলাই কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আহত এবং পঙ্গুত্ববরণকারী সহযোদ্ধাদের দেখতে গেলে সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ, রিফাত রশিদ এবং মাহিন সরকারকে ঘিরে ফেলে গোয়েন্দারা। তখন আমাদের কয়েকজন নেতার তত্ত্বাবধানে দুটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের সেখান থেকে বের করে সেইফ হোমে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। সেইফ হোমে থেকে গোয়েন্দা নজরদারি এড়িয়ে আন্দোলন জোরদার করার ব্যাপারে আমরা তাদের দিকনির্দেশনা দিই।
২৭ জুলাই অনলাইনে প্রেস কনফারেন্স আয়োজন করে সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ, রিফাত রশিদ, মাহিন সরকার, আব্দুল কাদেরসহ অন্য ছাত্রনেতারা। সেই প্রেস কনফারেন্সে শিবিরের সহায়তায় ‘স্টুডেন্ট এগেইনস্ট অপ্রেশন বা এসএও এর প্রস্তুত করা গণহত্যার ডকুমেন্টস এবং শহীদদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এই তালিকা দেশ-বিদেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
৩০ জুলাই হাসিনা সরকার ঘোষিত রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখ্যান করে ‘মুখে ও চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তুলে অনলাইনে প্রচার’ কর্মসূচির অভিনব আইডিয়া দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদ ও ঢাবি শিবিরের সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ। যা দেশের সব শ্রেণির মানুষকে এক কাতারে নিয়ে আসে।
এরই মধ্যে সারা দেশে গণগ্রেফতার শুরু হয়। আওয়ামী-পুলিশ বাহিনী প্রতিদিন রাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রদের গ্রেফতার করছিল। ছাত্রদের কাছে সেই রাতগুলো ছিল বিভীষিকার। এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশে ছাত্রজনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা-মামলা-গুম ও খুনের প্রতিবাদে ৩১ জুলাই ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সারা দেশে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে শিক্ষক, আইনজীবী, পেশাজীবীদের সংগঠিত করার জন্য সমন্বয়কদের সঙ্গে নিয়ে নিরলস প্রচেষ্টা চালানো হয়। ঢাকায় হাইকোর্টে অবস্থান কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবী এবং পেশাজীবীরা অংশ নেন। এতে আন্দোলনে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়।
জুলাই মাসে শহীদ এবং আহত সহযোদ্ধাদের স্মরণে ৩১ জুলাই সন্ধ্যায় ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় নির্যাতনের ভয়ংকর কালো দিনগুলোর স্মৃতিচারণ, শহীদ ও আহতদের নিয়ে পরিবার-সহপাঠিদের মাঝে স্মৃতিচারণ, শহীদদের নিয়ে গল্প লেখা, চিত্রাংকন, গ্রাফিতি আঁকা হয়। ৩২ জুলাই অনলাইন এবং অফলাইনে সর্বাত্মকভাবে পালিত হয় কর্মসূচিটি। ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ ও ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি প্রণয়নে ভূমিকা রাখেন জাহিদুল ইসলাম ও আলী আহসান জুনায়েদ।
৩২ জুলাই (১ আগস্ট) জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে ফ্যাসিস্ট সরকার। ছাত্রশিবির খুনি হাসিনার জারি করা অবৈধ প্রজ্ঞাপনের বিপরীতে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে চলমান গণআন্দোলনকে আরও বেগবান করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরের দিন ৩৩ জুলাই (২ আগস্ট) বাদ জুমা সারা দেশে দোয়া, শহীদদের কবর জিয়ারত এবং জুমার নামাজ শেষে গণমিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই কর্মসূচিতে ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে খুনি হাসিনার মসনদে কাঁপন ধরিয়ে দেয়। চলমান গণদাবির মুখে আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় ফ্যাসিস্ট সরকার। এর মাধ্যমে ছাত্র-জনতার প্রাণের দাবি হয়ে উঠে ‘দফা এক দাবি এক, খুনি হাসিনার পদত্যাগ’।
পরবর্তী দিন ৩৪ জুলাই (৩ আগস্ট) জাতীয় শহীদ মিনার থেকে সরকার পতনের একদফার ঘোষণা ও অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। সারা ঢাকা থেকে শহীদ মিনারে আগত লক্ষ লক্ষ ছাত্র-জনতা তৎক্ষণাৎ অসহযোগ আন্দোলন এবং একদফার সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে।
৩৫ জুলাই (৪ আগস্ট) প্রথমে দুপুর ২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শাহবাগে সমাবেশের ডাক দেয়। একই দিনে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ শাহবাগে দুপুর ১২টায় সমাবেশের ঘোষণা দিলে ছাত্রজনতার সমাবেশ এগিয়ে আনার পরামর্শ দিই আমরা। সেই পরামর্শে শাহবাগের সমাবেশ ১১টায় শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
সমাবেশ সফল করতে ছাত্র-জনতা ফজরের পর থেকেই শাহবাগ অভিমুখে রওনা দিয়ে সকাল ৯টার মধ্যে শাহবাগ দখল করে মুক্তিকামী বিপ্লবী জনতা। সেদিন আমাদের ‘ড্রিম প্রজেক্ট’ নামে সংগঠিত কর্মী বাহিনীর মাধ্যম দশটি ভাগে ভাগ হয়ে ছাত্রজনতাকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকা শহরে ফ্যাসিবাদীদের বিভিন্ন আস্তানা ভেঙে দিয়ে খুনিদের পতন তরান্বিত করি।
সেদিন আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে মিলে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শতাধিক লোককে শহীদ করে। শহীদ মিনার থেকে লাশের মিছিল নিয়ে শপথ করি, এই খুনি হাসিনাকে আমরা একমুহূর্তও সহ্য করব না। সেদিন সন্ধ্যায় পতন সুনিশ্চিত জেনে খুনি হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো কারফিউ জারি করলেও ছাত্রজনতা রাজপথে অবস্থান নেয়।
এরপর এলো “লং মার্চ টু ঢাকা” কর্মসূচি। সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে ৬ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলে শিবিরের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরামর্শে একদিন এগিয়ে আনা হয়। এরপর আসিফ মাহমুদের সেই ঘোষণা আসে ‘পরশু নয় আগামীকালই লং মার্চ টু ঢাকা’।
সারা রাত ধরে সারা দেশ থেকে মুক্তিকামী জনতা ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে অবস্থান নেয়। ফজরের নামাজের পর নতুন সূর্যোদয়ের অপেক্ষায় থাকা বিপ্লবী জনতা শাহবাগ অভিমুখে রওনা দেয়। জনতাকে সংগঠিত করে গণভবন অভিমুখে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমরা দশটি স্পটে অবস্থান নিই।
সকাল বেলা শহীদ মিনার এবং শাহবাগে পুলিশ বাহিনীর গুলির সম্মুখীন হয় ছাত্রজনতা। গুলির মুখে টিকতে না পেরে আমরা অলিতে গলিতে অবস্থান করে জড়ো হতে থাকি। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ মুক্তিকামী জনতা সব ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগে অবস্থান নেয়। ততক্ষণে খুনি হাসিনা লক্ষ্মণ সেনের মতো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
ঢাকাসহ সারা দেশে কোটি কোটি ছাত্র-জনতা শোকরানা নামাজ আদায়, মিষ্টি বিতরণ এবং আনন্দ মিছিলের মাধ্যমে বিজয়ের আনন্দ উপভোগ করেন। ঢাকার সমবেত জনতা গণভবন অভিমুখে পদযাত্রা করে এবং অবশেষে হাজারো শহীদের রক্তের বরকতে ফতেহ গণভবনের মধ্য দিয়ে নির্মিত হয় ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত নতুন বাংলাদেশ’।
বিপ্লব চলাকালে আহতদের চিকিৎসা ও অ্যাম্বুলেন্স, গ্রেফতারকৃতদের জন্য আইনজীবী, ফ্যাসিস্ট প্রোপাগান্ডার মোকাবিলায় সাংবাদিক ও ফ্যাক্টচেকারদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখেছি আমরা।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার পরাজয় যখন মোটামুটি নিশ্চিত তখন নতুন সরকার প্রধান কে হবেন তা আলোচনা করে ঠিক করা হয়। সবার আগে ড. ইউনূসের নামই মাথায় আসে। সবার পরামর্শে উনাকে আমরা এই গুরু দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করি।
নানা কৌশল আর ত্যাগের বদৌলতে আমরা পেয়েছি নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ। আমরা শুধু পত্রিকায় ছাপানো কিংবা মিডয়ার খবরগুলোই জানি। কিন্তু এর বাইরে শত শত ঘটনার বিবরণ হয়তো অজানাই থেকে যাবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হার না মানা লড়াই করেছে। মাদ্রাসার ভূমিকাও ছিল অগ্রগণ্য। মীর মুগ্ধসহ শত শত ভাই-বোনের শাহাদাতের মাধ্যমে এ আন্দোলন গণমানুষের আন্দোলনে পরিণত হয়।
সমন্বয়করা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব ছাত্র সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করে ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করে। ছাত্র ও নানা শ্রেণি-পেশা মানুষদের সম্মিলনেই একটি সফল গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন একটাই স্বপ্ন আমাদের এই দেশ সবার- এই অনুভূতিটা সৃষ্টি করে শহীদের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা কাজ করে যাব।
লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শেয়ার করুন