জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলার উদ্যোগে কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ

সিলেট

সা¤্রাজ্যবাদের এক দালালের পরিবর্তে আরেক দালাল নয় জাতীয়
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সংবিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হোন

জাতীয় জীবনের সমস্যা সংকট গুলো উত্তরণের লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা গতকাল ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় সিলেট ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ করে। জেলা সভাপতি এ্যাডভোকেট কুমার চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক শাহীন আলম-এর পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্তিত থাকেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক জননেতা প্রকাশ দত্ত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ^াস, বাংলাদেশ স’মিল শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রবীন রাজনীতিবীদ খলিলুর রহমান খান। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রতি সা¤্রাজ্যবাদী দেশগুলো তথা একক পরাশক্তি মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের নেতৃত্বে ইউরোপীয় সা¤্রাজ্যবাদীরা এবং প্রতিপক্ষ চীন-রুশ জোটের তৎপরতা, প্রতিদ্ধন্ধিতা তীব্রতর হয়ে সামনে আসে। মার্কিনের নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের সা¤্রাজ্যবাদীরা বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকার রক্ষার কথা বলে নিষেধাজ্ঞার ধারাবাহিকতায় ভিসানীতির কৌশলে অগ্রসর হচ্ছে। অন্যদিকে চীন-রাশিয়া তাদের এই তৎপরতাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ নব্য উপনিবেশবাদ বলে সরকারকে সমর্থন করার কৌশলে অগ্রসর হচ্ছে। এসব রেশগুলোর প্রতিনিধি দল ধারাবাহিকভাবে ঢাকা সফল করে রাষ্ট্র, সরকার প্রশাসনের সাথে প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলসমূহ ও বিভিন্ন শক্তির সাথে ব্যাপক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার স্থল সংযোগ সেতু এবং প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগর সংযোগকারী মালাক্কা প্রণালি সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরীয় দেশ হিসেবে নয়াউপনিবেশিক আধা-সামন্তবাদী বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক ও রণনীতিগত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় উভয় সা¤্রাজ্যবাদী জোট প্রতিদ্বন্ধীতা তীব্রতর হয়ে চলছে। সা¤্রাজ্যবাদী আগ্রাসী যুদ্বে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতে চাইছে। বাংলাদেশ তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে তাদের আগ্রাসী যুদ্ধে স্ব-স্ব জোটে সম্পৃক্ত করতে সোফা প্রক্রিয়ায় হানা টিকফা, যৌথ অংশদারিত্ব সংলাপ, যৌথ নিরাপত্তা সংলাপ, যৌথ সামরিক পরিকল্পনা ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় অগ্রসর করছে। মার্কিন পরিকল্পনা টেকানোয় চীন-রাশিয়া পাল্টা পরিকল্পনায় বিআরআই, এসসিও, র‌্যাটেস এআইআইবি, বিক্রস এনডিবি, সিকা ইত্যাদি পদক্ষেফ কার্যকরী করে চলছে। বাংলাদেশ চীনের সামরিক সহযোগিতা প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীতে প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে সামনে আসে।

বড় বড় অবকাঠামোতে চীনের অংশগ্রহণ, রূপপুরে রুশ পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান, রুশ অস্ত্র ক্রয় চুক্তি, জ¦ালানি খাতে গ্যাজপ্রয় কোম্পানীর অংশগ্রহণ তৎপরতার মধ্য দিয়ে চীন-রাশিয়া বাংলাদেশে স্বীয় লক্ষ্য অর্জনে তৎপরতা চালাচ্ছে। সা¤্রাজ্যবাদের দালাল স্বৈরাচারী ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনা সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের কারচুপি, প্রহসনমূলক একতরফা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসে বর্তমানে সা¤্রাজ্যবাদী পরিকল্পনায় যেনতেন উপায়ে ক্ষমতায় থাকতে মরিয়া। শোষণ-লুন্ঠন তীব্রতর করা, চাল-ডাল-তেল-নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, গ্যাস-বিদ্যুৎ জ¦ালানিতেল, সার, কীটনাশক, ঔষধসহ লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতি, মূল্যস্ফীতি সহ সামগ্রিক সংকট শ্রমিক কৃষক জনগনের জীবনকে আরো অতিষ্ট বিপর্যস্ত করে চলছে। ব্যাংকিংসহ অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে ঢালাও লুটপাট ১৩ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার, উন্নয়নের সাফাই গেয়ে মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুটপাট, জাতিসংঘের এসডিজি এমডিজি বাস্তবায়ন করে চলছে। দেশের অর্থনীতিকে দেউলিত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দেশ প্রেমিক জনগনের শক্তিকে ধ্বংস করা প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিপক্ষকে কোনঠাসা করার জন্য সরকার ধারাবাহিক দলীয় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস তীব্রতর করছে। আন্দোলন সংগ্রাম দমনে বিভিন্ন কালাকানুনের ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল এ্যাক্ট প্রণয়ন, অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা আইন করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। বিএপি নেতৃত্বে জোট জনগন ও জাতীয় জীবনের জরুরী সমস্যাকে আড়াল করে প্রভুর আীর্শবাদ নিয়ে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে তৎপর। এভাবে ক্ষমতা ও গদি নিয়ে দুই দালাল জোট ও সমমনাদের মধ্যে তোড়জোড় চলছে। সা¤্রাজ্যবাদী উভয়পক্ষের চাওয়া হচ্ছে স্বল্প লক্ষ্য ও পরিকল্পনা হাসিলে সবচেয়ে উপযোগী দালাল ও শক্তিকে ক্ষমতায় আনা। সংঘর্ষ সংঘাত পরিস্তিতি তৈরী হলে নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে গেলে প্রভুরা সেনাবাহিনীকে কাজে লাগাতে পারে। বাম নামধারী সুবিধাবাদী ও সংশোধনবাদীরা সা¤্রাজ্যবাদী উভয় জোটের বিরুদ্ধে না দাঁড়িয়ে কোনোনা কোন পক্ষ অবলম্বন করছে এবং দালালদের লেজুড়বৃত্তি করছে। আজ আমাদের সকল দেশপ্রেমিক শক্তি, ব্যাক্তি সংগঠনের তথা ৩য় বিশ^যুদ্ধের বিপদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। শ্রমিক-কৃষক জণগনের সমস্যা সংকটের মূল কারণ সা¤্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের নির্মম শোষণ-লুণ্ঠন উৎখাত করে এদেশে জণগনের রাষ্ট্র, সরকার সংবিধান প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় গনতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পুন্নের লক্ষ্যের লড়াইয়ে শরীক হওয়া। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মো. সুরুজ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখর সেন,  বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়স সংঘ সিলেট জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক রমজান আলী পটু, শাহপরান থানা কমিটির সভাপতি মো. খোকন আহমদ, জাতীয় ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখার সভাপতি উসমান গণি, জেলা শাখার আহবায়ক শুভ আজাদ (শান্ত), সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আনছার আলী, সিলেট জেলা প্রেস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ শাওন, স’মিল শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি সিলেট সদর উপজেলা কমিটির আহবায়ক হুসাইন মোহাম্মদ লিটন, যুগ্ন আহবায়ক রেহেনা বেগম সহ প্রমুখঃ

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *