জামায়াত আমাকে আশ্রয় না দিলে রাস্তায় পড়ে থাকতে হতো

বাংলাদেশ

যে কথায় জামায়াতে ইসলামী কষ্ট পায়, সে কথা আমি আর বলবো না। প্রয়োজনে আমার জবান কেটে দেব। কারণ, তারা আমাকে আশ্রয় দিয়েছে,—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সদ্য জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেওয়া মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন।

শনিবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার গচিহাটা কলেজ মাঠে আয়োজিত এক কৈফিয়ত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মেজর রঞ্জন বলেন, জামায়াতে ইসলামী আমাকে আশ্রয় দিয়েছে। তারা আশ্রয় না দিলে হয়তো আজ আমাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে হতো। এই বয়সে নতুন করে ঘর বা দল গড়ার সামর্থ্য আমার নেই। আমার ঘরে চাল নেই, চুলা নেই—আমি কীভাবে নতুন ঘর বানাবো? কিন্তু জামায়াতে ইসলামী আমাকে আশ্রয় দিয়েছে। এজন্য আমি তাদের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।

নিজের রাজনৈতিক অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজ হঠাৎ করে দেখছি আমার দাম বেড়ে গেছে। বিএনপির অনেক বন্ধু ফেসবুকে আমাকে নিয়ে লেখালেখি করছে। এতে আমি শুকরিয়া জানাই। তারা এখন বুঝতে পারছে, আমি তাদের ঘরের একটি শক্ত খুঁটি ছিলাম। আমি নিজে দল ছেড়ে আসিনি—আপনারাই আমাকে বের করে দিয়েছেন। গত তিন বছর আমার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখেননি, এমনকি বিয়ের দাওয়াতও দেননি। আজ আমাকে গালাগালি করছেন—এতেও ভালো লাগে, কারণ বুঝতে পারছি আপনারা আমাকে নিয়ে ভাবছেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবো না। জামায়াত যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে তারা নিশ্চয়ই আমাকে কোনো ভালো জায়গায় রাখবে।

জামায়াতের কাছে তিনটি আবদার তুলে ধরে মেজর রঞ্জন বলেন— প্রথমত, তিনি দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজিমুক্ত, সন্ত্রাস ও দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ চান। দ্বিতীয়ত, সত্য প্রকাশ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা চান—বিশৃঙ্খলা নয়। শান্তির মাধ্যমেই ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হোক। তৃতীয়ত, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান, যেখানে মানুষ মানুষকে সম্মান করবে।

এ সময় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা একজন ত্যাগী নেতাকে হারিয়েছি। এই হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই। যারা জড়িত, প্রয়োজনে পাতাল থেকে তুলে এনে হলেও তাদের বিচার করতে হবে। আমরা শুধু বিচারই চাই না, শহীদ হাদির রেখে যাওয়া কাজ বাস্তবায়ন করতে চাই।”

সভায় কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী–পাকুন্দিয়া) আসনে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা শফিকুল ইসলাম মোড়ল, উপজেলা আমির অধ্যাপক মোজাম্মেল হক জোয়ারদার, উপজেলা জামাতের নায়েবে আমীর সাইদুল হক বিএসসি, সেক্রেটারি মাওলানা মাহমুদুল হাসানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কৈফিয়ত সভায় মেজর রঞ্জনের ভক্ত-সমর্থকসহ স্থানীয় হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সভা শেষে শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *