বাংলাদেশের ওপর জেঁকে বসা স্বৈরাচারকে ধূলায় মিশিয়ে দিয়েছে জুলাই বিপ্লব। বিপ্লবের পরতে পরতে জড়িয়ে ছিল রক্ত, সংঘাত, নির্মমতা। শত শত প্রাণের বিনিময়ে অবশেষে ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে দেশ। বিজয় হয়েছে মুক্তিকামী মানুষের।
এ বিপ্লবের নানা দিক নিয়ে পুঁথি লিখেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম সুজন। ‘জুলাই বিপ্লবের পুঁথি’ শিরোনামে লেখা পুঁথিটি পাঠকের জন্য নিম্নে দেওয়া হলো-
পুঁথি পাঠ শুরু করি মহান আল্লাহর নামে
রহিম ও রহমান তিনি আসমান ও জমিনে
দূরুদ পাঠ করি দয়ার নবীর শানে
শাফায়াত করবেন যিনি হাশরের ময়দানে।
স্মরণ করি আবু সাইদ, শহীদ মুগ্ধরে
ইন্তিফাদা দিয়ে গেলরে জীবনটারে
স্মরণ করি আরো যত আছেন শহীদ
তারা খুনে রাঙা হলো রাজপথে বীর।
তাদের আত্মা হোক শান্ত, মাগফিরাত চাই
কবুল করো মাবুদ আমরা মজলুমের ভাই।
আহত ভাই-বোনের লাগি করি আমরা দোয়া
জলদি তারা ফিরে আসুক হাসপাতাল ছাড়িয়া।
আহাদ ও জাবির- দুই শিশু মারলোরে জালিম
খুনি হাসিনা নাম তার জানে সব মজলুম।
দয়াল আল্লাহ বিচার দিলাম ভরা অশ্রু দিয়া
শক্ত করে ধর তাদের, দিও না ছাড়িয়া।
হায়, ঘষেটি, তোমার হৃদয় এতটাই পাথর,
মাসুম শিশুর রক্তে করলে লালমাখা শহর।
শহীদী রক্ত বইতে বইতে কারবালায় মিশে
ইমাম হোসেন আমাদেরে বরণ করতে আসে।
পুঁথি পড়ি, স্মৃতি গড়ি, জ্বালাই প্রদীপ
দূর করি যত জুলুম আছে এই বদ্বীপ।
তাদের ত্যাগ যেন মনে থাকে চিরন্তন
বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ে যাব আমরণ।
এখন আমরা ধীরে ধীরে সত্য তুলে ধরি
থাকবেন সবাই আমার সাথে এ আশা করি
এ ইতিহাস রক্তে কেনা, বড়ই মূল্যবান
আমার কথা শুনেন সবাই দিয়ে মন-প্রাণ।
যখন হয় শুরু দেশে গুলাগুলি
রাষ্ট্র সাজাতে চায় মিথ্যা যত বুলি।
আর…
আসুক, হাসিনা খুনি, আসুক আবার
কত রক্ত চাও ডাইনি বুড়ি আমার।
টেনে হিচড়ে খাবলে ধরে ছিড়িয়া নিব
আর একটা গুলি হলে জ্যান্ত কবর দিব
একদম… পুতায়া দিব।
অনাগত যত সুপ্ত ফ্যাসিস্ট হও সাবধান
কিল ঘুষির চোটে তোরা হবে খান খান।
সবচাইতে বড় হলো নিজের দিলকে জানা
ইকবাল বলে গেলেন, আপন খুদি চিনা।
স্বৈরাচারীর লক্ষ্মণ যদি প্রকাশ পায় মনে
ঝাটা দিয়ে দূর কর সকলের কল্যাণে।
অনেক কথা বলে ফেললাম স্বাধীনতা পেয়ে
চলেন আবার ফিরে যাই লড়াইয়ের গান গেয়ে।
বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই আদিকাল থেকে,
শহীদ হাবিল যায়নি এখনো আমাদেরে রেখে।
ইনসাফের তরে মোরা লড়ছি লাগাতার,
প্রভু দাও মোদের শক্তি, সাহস বারবার।
বাপ ছাড়া হয় না যেমন কোনো সন্তান
’২৪ এর নাড়ি হলো ’১৮ র বয়ান।
সিলসিলা ধরি মোরা শুরু করিলাম
ইতিহাসে স্বীকৃত তা– কোটা আন্দোলনই নাম।
৫৬ ভাগ খয়রাত পাবে, মেধাবীরা নিঃশেষ হবে এই ছিল অবস্থা
তাই দেখিয়া আমার এক ভাই করলেন এক ব্যবস্থা।
সংবিধান মানে না তাহা – করলেন একটা রিট
বিচারক মহোদয় তা দিলেন করে খারিজ।
হাকিম নড়ে, হুকুম নড়ে না এই রকম অবস্থা
মেধার দুনিয়া হয়ে গেল এতটাই সস্তা।
এরপর তারা শুরু করল কোটা আন্দোলন
যোগ্য যারা তারা পাক ন্যায্যতার বন্টন।
বুকের মধ্যে দ্রোহ ছিল, দেশ হবে সবার
শোষণের রশি ছিঁড়ে যাইবেতো আন্দোলনে এবার।
মাঠে নামে ছাত্রলীগ, পিটায় ছাত্রদের
খুনি হাসিনা খুশি হয়েছিলেন ঢের।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান চায় খয়রাতী কোটা
তারা খাবে মুরগি পোলাও, আমরা পাব ঝুটা।
ছাত্রলীগ কমান্ডকে বলে রাজাকার ট্যাগ লাগাও
যত পার ওদের শিবির বানাও
রাজাকার ট্যাগ দিয়ে মারে যে তাকবীর
যারে তারে ধরে বলে তুমি তো শিবির।
নুরকে বেদম প্রহার করে মাথায় মারে লাথি
কুলাংগার ছাত্রলীগ আর তাদের সকল সাথী।
রাবির তরিকুলের উপর চালায় হাতুড়ী
ডান পা ভেঙে দেয় মারে জোরে বাড়ী।
ঢাকার আকাশ জুইড়া ঝড় ওঠে আবার,
কোটা না রাখার হুমকি দিল যে মাদার
তিনি হলেন মাতা মোদের, মমতাময়ী
স্বজন হারার ব্যথা বলায় তিনি বিশ্বজয়ী।
হলে থাকি, খাবার খাই ৩৮ টাকায়
১৫ টাকায় সিট ভাড়া মাদারের দয়ায়।
অক্টোবর ’১৮ তে দিল ঘোষণা
কোটা আর থাকবে না, কর পড়াশুনা
এই শুনিয়া আমরা সবাই টেবিলেতে যাই
কিছুদিন পরে মাকে ঠিকই চিনতে পাই।
’২৪ সালের ৫ জুন… বেঈমানীর কাহিনী
কোর্টের ঘাড়ে বন্দুক রাইখা দিল কোরবানী
হিটলারীয় গেস্টাপীয় তরিকা কায়দায়
অধিকার কাইড়া নিল আম্মা হাসিনায়।
৭ জন যোদ্ধার পোলা আবার করল রিট
মুখ দেখিয়া হাইকোর্ট দিল আজব এক নোটিশ।।
দেশ কি তবে শুধু মহান কোটার
আমার বাপ ছোট ছিল – বয়স হয়নি তাঁর যুদ্ধে যাবার
দুনিয়ার কোথাও এই নীতি নাই জানি
তবে কেন মোদের বেলায় বৈষম্যের এই কাহিনী।
দেশ কি তোমার বাপের তালুক? ভাগ নিবা একা?
গণভবনে বইসা দিচ্ছ কেন এত ধোঁকা!
সোশাল কন্ট্রাক্ট মাইনা তোমায় আমরা বসাইছি
গণতন্ত্রের মা তুমি, দিচ্ছ কেন ফাঁকি।
নাটক কম কর পিয়- চাইব না তো ভিক্ষা
ছলছাতুরী করেছ অনেক এবার দিব শিক্ষা।
আমার বাবা ট্যাক্স দেয়, আমিও মালিক
আমার ন্যায্য হিস্যা কই, জবাব দাও ঠিক ঠিক।
এবার শুরু করি মোরা জুলাই মাসের কথা,
বিপ্লবী ছাত্রদের সেই সংগ্রামে গাঁথা।
পাঁচই জুনে হাইকোর্ট দেয় একটা রায়,
আগের রায় বাতিল হলো দেশবাসী জানতে পায়।
ছয় তারিখ জুন মাসে বিক্ষোভ করে ঢাবি
আদালতের রায় বাতিলের জোরালো এক দাবী
নয় জুন হতে শুরু টানা আন্দোলন,
ত্রিশ জুন অবধি তাহা মাঠ রাখে গরম।
মেধাবীদের মাথায় উঠছে আন্দোলনের ভূত
জুলাই মাসের প্রথম থেকে সারাদেশে ক্ষোভ
পাঁচ জুলাই দেয় তারা বাংলা ব্লকেড ঘোষণা,
ক্লাস বর্জন করে দেখায় নানান নমুনা।
আট থেকে চৌদ্দ তারিখ কাঁপে রাজপথ
সকাল সন্ধায় শুনতে পাই শুধু বজ্র কঠোর শপথ।
চৌদ্দ তারিখ হাসিনা বলে, কিছু করার নাই
ছাত্ররা স্লোগানে স্লোগানে বলে এবার জবাব চাই।
ছাত্রদের রাজাকার বলায় তারা বেজায় চটল
আমি রাজাকার শব্দে পাল্টা জবাব পেল।
সাদাসিধে জাফর ইকবাল বললেন কেমন কথা
‘দেখলেই মনে হবে রাজাকার’ ছাত্রদের মাথা।
আরো কত ফ্যাসিস্ট আছেন বুদ্ধিজীবী যত
রঠা ধর্মের আড়ালে তারা ষড়যন্ত্রে রত।
মুক্তিযুদ্ধ তাদের কাছে ধর্মের সমান
পালন করে এর আড়ালে ভারতের ফরমান।
পনেরোতে ওকা দেন খুঁচানো এক বাণী
ছাত্রলীগ আছে তাদের কি যে উস্কানী।
বেশি লম্বা হয় নাই ঐ দিন কাউয়ার কা কা
বুঝতে পারলিতো ব্যাটা আসবে তীরের ব্যথা।
ষোল জুলাই শহীদ হলেন মোদের সাইদ ভাই,
দুহাত মেলে সটান বুকে দাঁড়াই রইলেন ঠাই।
বিপ্লবের মহানায়ক তোমাকে সালাম
দেশবাসীর প্রিয় তুমি, মুক্তির অপর নাম।
‘মোর হাসিনা মোর ছেলেক মারি ফালালি’’
আমার মায়ের এমন কথার জবাব কি দিবি
খুনি হাসিনা, সাঙ্গপাঙ্গ এবার প্রস্তুত হও
দেশ বিক্রি করার ঠেলা এখন বুঝে লও।
’১৮ তে শহীদ হলেন প্রিয় মুগ্ধ ভাই
‘পানি লাগবে, পানি লাগবে’ এখনো শুনতে পাই
পানি দিতে, পানি দিতে আর এই দুনিয়ায় নাই।
এরই সাথে চলতে লাগল শহীদী মিছিল
রক্তের বন্যায় ভেসে গেল বদ্বীপের জমিন।
হইহুলা শুনে বাবা মেয়েরে আনতে যায়
বুলেটের আঘাতে ময়না ফিরে নাহি চায়।
মসজিদ হতে এলান আসে বাঁচান, বাঁচান
মজলুমের চীৎকারে খোদার আরশ কম্পমান।
বেওয়ারিশ লাশের স্তুপে বাবা খুঁজে ছেলে
ভয়ার্ত আর্জি তাহার বের করেন বাবুরে।
আয়নাঘর আর যত গোপন বন্দীশালা
প্রকাশ্যে আসলো যখন – গায়ের লোম হলো খাড়া।
জুলাই মাসের ১৯ তারিখ শাটডাউন শুরু
আর্মি, বিজিবি নামায় আমাদেরই গুরু।
বন্ধ করে ইন্টারনেট গণহত্যা চালায়,
পিয় তখন গণভবনে কত সুখে ঘুমায়।
বিশ্ববাসী ছি ছি করে – মোদি দেয় কানপড়া
ছাড়িও না ক্ষমতা পিয় – আমি আছি খাড়া।
যত পার মানুষ মার, কর নির্বিশেষ
তুমি না থাকিলে আমিও হব শেষ।
সেভেন সিস্টারের জন্য মোদী চিকেন নেক যে পায়
হাসিনার এতো প্রতিদান কেমনে ভোলা যায়।
জনতা ছাড়ে না মাঠ, কি বিপ্লবের মায়ায়
এমন এক বিপ্লবের আশায় ১৫ বছর কাটায়
গুম, খুন ক্রসফায়ার চলতো নিত্যদিন
ছোট্ট শিশু কেন্দে বলে বাবা আসবে কোনদিন।
অবস্থা আসলে ছিল এতটাই সঙ্গীন
কত নারীর মেহেদীর রঙ হয়েছে মলিন।
ভাসতো লাশ নদীতে – পত্রিকায় আসতো না সবদিন
মামলায় তটস্থ রাখত- কোর্ট করা লাগতো ফি দিন।
ছাত্র-জনতা ঐক্য নিয়ে ফ্যাসিস্ট তাড়ায়
যাত্রাবাড়ী স্টালিনগ্রাড তার মাথা না নোয়ায়।
স্নাইপারের হেডশটে তবু না ডরায়
জানের মায়া ছেড়ে দিবে তবু লড়ে যায়।
হাসিনা করল মেট্রোরেলে দারুণ অভিনয়
কান্না করল পিলার ধরে গ্লিসারিন বেরোয়
নাটক কম কর পিয় বলে প্রতিবাদ জানায়
ছিছি দেয় ছোটবড় অভিনয়ের দায়।
লজ্জা তবু লাগে নারে এই অমানুষের গায়
এমন এক ডাইনীর খপ্পরে ছিলাম কপাল দোষে হায়।
আদম থেকে পিলার বড় লেডি হিটলার কয়
একটার বদলে দশটা লাশের কথা অনেক আগেই ভাইরাল হয়।
জুলাই মাসের একুশ তারিখ বাতিল ঘোষণা,
তেইশ তারিখে প্রজ্ঞাপন জারি করে খুনি হাসিনা।
তুলে নেয় নাহিদকে ঐ একই দিনে,
ইন্টারনেট ফের চালু হলো ফ্যাসিস্ট শাসনে।
প্রাইভেট চালায় ততদিনে মাঠের আন্দোলন
সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তাতে করে সমর্থন।
তারা যদি ঐ সময় না তোলত সুর
আন্দোলন হয়তো নিত অন্য কোন মোড়।
দেশের তরে তাদের ত্যাগ সোনা দিয়ে লেখা
শহরের দেয়ালে দেয়ালে ভাই গ্রাফিতিতে আঁকা।
জুলাই মাসের ছাব্বিশ থেকে ব্লক রেইড অভিযান
বাসা থেকে ধরে নিয়ে কোর্টে চালান।
অবস্থা এমন চলতে থাকল বেশ কয়টা দিন
দেশ যেন এক বন্দীশালা, জীবন্ত কফিন।
ছয় নেতা বন্দিদশায় আটাশ তারিখ হতে
ভীতিকর অবস্থা চলছে, লেখছে ফেইসবুকে
ডিবিতে জোর করে ভিডিও প্রচার- প্রতিবাদে সাথে সাথে সারাদেশ সোচ্ছার
হারুন দেয় মুখরোচক খাবারের দারুণ এক অফার
বিচারপতি বলে উঠলেন- বাটপারির কি দরকার
মুক্তি দাও তাদের তুমি- যত তাড়াতাড়ি
মায়ের দেয়া খাবার খাক, চলে যাক বাড়ী।
জিম্মি করে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা
ব্যাকফায়ার করল হারুনের নাৎসি চেতনা।
সেই রাতেই ইন্টারনেট চালু হলো আবার
গণহত্যার ভিডিও তখন ফেসবুকে সবার।
দিশেহারা হাসু আপা করে আরেক ভুল
জামায়াত-শিবির ব্যান করে দিতে হলো মাশুল।
হাসু দিল শোক পালনের সরকারি ঘোষণা
লাল কাপড়ে জানান দিলাম আমরা মানি না।
মার্চ ফর জাস্টিস ভাই অভ্যুত্থানের প্রাণ
আমার প্রাপ্য আমাকে দাও করো না কূটনাম।
পাখির মতো গুলি করল- ঝরল কত প্রাণ
পুলিশ তোমায় ভুলি কেমনে –স্মৃতিতে অম্লান।
এই অবস্থায় জাতিসংঘের বিবৃতি এলো
মানবাধিকার সংগঠনরা কঠোর অবস্থান নিল।
মাঝখানে চলল যে ভাই কুসুম কুসুম খেলা
উষ্ঠা মেরে ছাত্র-জনতা সরালো সে মুলা।
জড়ো হলাম শহীদ মিনারে শহীদ স্মরণে
এপিসি থেকে ফেলে দেয়া ইয়ামিন তোমায় ভুলি কেমনে।
‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ শহীদ স্মৃতি গাঁথা
স্বাক্ষী থাকো আকাশ তুমি নাহি যেতে দেব বৃথা।
এবার এলো ১ দফা হটাতে স্বৈরাচার
গর্জে উঠল বিপ্লবী চোখ- গণভবনে যার।
মার্চ টু ঢাকা, মার্চ টু ঢাকা ৫ তারিখ ভাই
স্বৈরাচার হটাতে এসো মিছিল করি তাই।
এ এক বিস্ময়! সারা বিশ্ব অবাক তাকিয়ে রয়
এত মানুষ রাজপথে বিশ্বে বিষ্ময়।
সবগুলো পা দীপ্ত মনে ঐদিকে যায়
বিক্ষুব্ধ অবস্থা দেখে হাসিনা পালায়।
ঘড়ির কাটায় ২:৩০
জঘন্য এক স্বৈরাচার হলো ফিনিশ।
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
ফাতহাম মুবিন…।।
ইনকিলাব, জিন্দাবাদ
বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।
শেয়ার করুন