দেশব্যাপী চলছে বিএনপি-জামায়াতসহ সহযোগী জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধ। টানা হরতাল-অবরোধে পর্যটন মৌসুম শুরুর যাত্রাতেই হোঁচট খাচ্ছেন চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। বছরের এই সময়ে শ্রীমঙ্গলের হোটেল-রিসোর্টে প্রচুর পর্যটক থাকলেও গত শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিনেও সেগুলো প্রায় ফাঁকাই ছিল। কারণ হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধ, হরতালকে দায়ী করছেন রিসোর্ট ব্যবসায়ীসহ খাত সংশ্লিষ্টরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বছরের এই সময় থেকেই চায়ের রাজ্যে ভিড় করতে শুরু করেন দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। কিন্তু হরতাল ও অবরোধের কারণে সব বুকিং বাতিল করেছেন তাঁরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসার পথে গণপরিবহন না পাওয়া ও রাস্তাঘাটে সংঘাত, সংঘর্ষের কথা চিন্তা করে কেউ বের হচ্ছেন না।
রোববার (৫ নভেম্বর) শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ হোটেল–রিসোর্টে কোনো পর্যটক নেই। রেস্টুরেন্টগুলোতে স্থানীয় লোকজন বসে আছেন। পর্যটন নগরীর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান খালি পড়ে আছে। বিদেশি পর্যটক নেই বললেই চলে।
শ্রীমঙ্গল ট্যুর গাইড অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলম বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে দেশি পর্যটক যেমন ঘুরতে বের হচ্ছেন না, তেমনি বিদেশি পর্যটকও বাংলাদেশে ভ্রমণ বাতিল করেছেন। বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলো বাংলাদেশে ভ্রমণকারী ও আসতে ইচ্ছুকদের সতর্কবার্তা দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই বিদেশি পর্যটক পাচ্ছি না। পাশাপাশি দেশি পর্যটকেরাও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বুকিং বাতিল করছেন। সারা দেশেই এখন পর্যটন এলাকাগুলোতে পর্যটকদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও গ্র্যান্ড সেলিম রিসোর্টের মালিক সেলিম আহমেদ বলেন, ‘দুর্গাপূজার শুরু থেকেই আমাদের শ্রীমঙ্গলের পর্যটন খাত বেশ জমে উঠেছিল। কিন্তু হরতাল–অবরোধের কারণে আমরা মৌসুমের প্রথম দিকেই হোঁচট খেলাম। অনেকেই আগাম বুকিং বাতিল করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এ সময় শ্রীমঙ্গলের চারদিক সবুজে ছেয়ে আছে। সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত শীত নামছে। সাধারণত এ সময়েই পর্যটকেরা শ্রীমঙ্গলে আসতে চান। কিন্তু নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাঁরা আসতে চাচ্ছেন না।
চলতি সপ্তাহের রোববার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রীমঙ্গল থেকে দূরপাল্লার যানবাহনের চলাচল বন্ধ ছিল তবে আন্তজেলা পরিবহনগুলো চলছে। ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক আছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর আছেন।
শেয়ার করুন