লতা মণ্ডল ক্যাচ নিয়েই মুখে আঙুল দিলেন। চুপ করতে বললেন স্বাগতিক সমর্থকদের। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণটা বাংলাদেশের হাতে থাকলেও আনিকা বোস ভয় ধরাচ্ছিলেন। তাকে ফেরানোর পর চিন্তার বড় অংশও দূর হয়ে যায় বাংলাদেশের। মেয়েদের হাত ধরে আরও একটি দুর্দান্ত জয়ের সাক্ষী হয় দেশের ক্রিকেট। জয়ের পর উদযাপন অবশ্য খুব একটা ছিল না নিগার সুলতানা জ্যোতিদের।
বেনোনির উইলোমোর পার্কে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান করে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রানের বেশি করতে পারেনি স্বাগতিকরা।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এই প্রথম তাদের হারালো বাংলাদেশের মেয়েরা। এর আগে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সবমিলিয়ে ১১ টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। ২০১২ সালে মিরপুরে খেলা প্রথম ম্যাচেই তাদের হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ১১ বছর ও ১০ ম্যাচ পর এলো এই জয়।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩৫ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় বাংলাদেশ। পরের ওভারেই অবশ্য ভেঙে যায় সেটি। নন্দোমেসো সানগাসের বলে ক্যাচ দিয়ে ৪ চার ও ১ ছক্কার ইনিংসে ২৪ বলে ২৩ রান করে আউট হয়ে যান তিনি।
রানের গতি কমেনি তাতে। ওপেনার মুর্শিদা খাতুনের সঙ্গে রান বাড়াতে থাকেন সোবহানা মোস্তারি। কিন্তু ১৭ বলে ১৬ রান করে সোবহানাও সাজঘরে ফেরত যান। এরপর মুর্শিদা খাতুনকে সঙ্গী হন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি।
দুজনের জুটি আর ভাঙতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের রানও বেশ ভালো জায়গায় নিয়ে যান তারা। হাফ সেঞ্চুরি তুলেও শেষ অবধি অপরাজিত থাকেন মুর্শিদা। ৫৯ বলে ৬২ রান আসে মুর্শিদার ব্যাটে। ৬টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান তিনি। ৬ চারে ২১ বলে ৩৪ রান আসে নিগার সুলতানার ব্যাট থেকে।
জবাব দিতে নেমে প্রোটিয়ারা শুরুতে বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিল। এই ম্যাচে অধিনায়কত্বের অভিষেক হওয়া তাজমিন ব্রেটিস ও আনিকা বোস তাদের দারুণ শুরু এনে দেন। ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ বলে ২৬ রান করা তাজমিনকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন রাবেয়া খান। দশম ওভারের তৃতীয় বলে এসে ৬৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তিনি।
পরের ওভারে আরেক উইকেট নেন ফাহিমা খাতুন। একপাশে উইকেট হারালেও অন্য প্রান্তে বাংলাদেশের ওপর চাপটা ঠিকই ধরে রেখেছিলেন আনিকা। ভয় ধরানো এই ব্যাটারকে ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে এসে ফেরান স্বর্ণা আক্তার। লতা মণ্ডলের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৪৯ বলে ৬৭ রান করেন তিনি।
ওই ওভারেই আরও একটি উইকেট নিয়ে ম্যাচের মোড় পুরোপুরি ঘুরিয়ে দেন স্বর্ণা। সবমিলিয়ে তিনি নেন পাঁচ উইকেট। কেবল পঞ্চম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ফাইফার নিলেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে শেষদিকে চেষ্টা করেন ডালমি টাকার। ২ চারে ১০ বলে ১৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। কিন্তু ততক্ষণে রান অনেকটাই ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট পান স্বর্ণা। এছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন নাহিদা, ফাহিমা ও রাবেয়া।
শেয়ার করুন