চার বছর আগের লর্ডসের ফাইনালটি এখনো জ্বলজ্বল করছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। অবিস্মরণীয় ওই ফাইনাল বিশ্বকাপের ইতিহাসের সেরা বলে বিবেচিত হয় এখন। লর্ডসের টানটান উত্তেজনার ফাইনালটি হয়েছিল ‘টাই’। গড়িয়েছিল সুপারওভারে। টাই হয়েছিল সুপারওভারও। বেশিসংখ্যক বাউন্ডারি হাঁকানোর নিয়মের মারপ্যাঁচে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানার্সআপেই সন্তুষ্ট থেকেছিল নিউজিল্যান্ড। দুই দল চার বছর পর পুনরায় বিশ্বকাপে মুখোমুখি হচ্ছে। এবার খেলছে সূচনা ম্যাচে।
বিশ্বকাপের প্রথম দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিকেটের একসময়কার মহাপরাক্রমশালী দলটি এবারের বিশ্বকাপে নেই। দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে বাইরে রেখে আজ মাঠে গড়াচ্ছে ১০ জাতির ক্রিকেট মহাযজ্ঞ। বিশ্বকাপে নেই জিম্বাবুয়েও। জশ বাটলারের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ খেলছে শিরোপা ধরে রাখতে। কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ড চাইছে দুঃস্বপ্নের অতীত ভুলে শিরোপা উৎসবে মাততে।
আহমেদাবাদে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় ম্যাচটি শুরু হবে। স্টেডিয়ামটির দর্শক আসন সংখ্যা ১ লাখ ৩২ হাজার। এটির পুরনো নাম মোতেরা স্টেডিয়াম। দ্বিতীয়বার নাম হয় সর্দার প্যাটেল স্টেডিয়াম। বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামটিতে এর আগে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে দুই দলেরই। ইংল্যান্ড দুই ম্যাচ খেলে জিতেছে একটি এবং হেরেছে অন্যটি। নিউজিল্যান্ডের সাফল্য শতভাগ। দুই ম্যাচে দুই জয়। গত আসরের দুই ফাইনালিস্ট এর আগে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে এখানে মুখোমুখি হয়েছিল। ব্ল্যাক ক্যাপসরা জিতেছিল ১১ রানে। দুই দল বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছে ১০টি। জিতেছে পাঁচটি করে। সর্বশেষ ম্যাচটি টাই হয়েছিল।
দুই দল এখন পর্যন্ত ওয়ানডে খেলেছে পরস্পরের বিরুদ্ধে ৯৫টি। হারজিত সমানে সমান- ৪৪টি করে। টাই হয়েছে তিন ম্যাচ, ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল যার একটি। পরিত্যক্ত বাকি চারটি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের দলগত সর্বোচ্চ স্কোর ৯ উইকেটে ৪০৮ এবং বিশ্বকাপে ৩২২। নিউজিল্যান্ডের দলগত সর্বোচ্চ ৫ উইকেটে ৩৯৮ এবং বিশ্বকাপে ২৪১। ইংল্যান্ডের সর্বনিম্ন স্কোর ৮৯ এবং বিশ্বকাপে ১২৩। নিউজিল্যান্ডের সর্বনিম্ন স্কোর ১৩৪ এবং বিশ্বকাপে ১৮৬ রান।
বাংলাদেশের কাছে হেরে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় ইংল্যান্ড। এরপর দেশটির ক্রিকেট বোর্ড পাল্টে ফেলে কোচিং স্টাফ। এর পর থেকে দেশটি সাদা বলের ক্রিকেটটাই পাল্টে দিয়েছে। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত দেশটি গড়ে ম্যাচ ওভার প্রতি ৬ রানের ওপরে রান করেছে। পাল্টে ফেলা ক্রিকেট নিয়ে ইংল্যান্ড প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ২০১৯ সালে। ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে ২৪১ রান করেছিল। বেন স্টোকসের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে ম্যাচটি ‘টাই’ করে ইংল্যান্ড। এরপর শিরোপা নির্ধারণ গড়ায় সুপারওভারে।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল প্রথমবারের মতো নির্ধারিত হয় সুপারওভারে। ১৫ ওভারের সুপারওভারও ‘টাই’ হয়। এরপর বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপ জেতানোর নায়ক বেন স্টোকস অবসর নিয়েছিলেন ওয়ানডে থেকে। অধিনায়ক বাটলারের বিশেষ অনুরোধে অবসর ভেঙে এবার বিশ্বকাপ খেলবেন স্টোকস। ইনজুরি কাটিয়ে দলকে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতাতে নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেন উইলিয়ামসন।
শেয়ার করুন