অনেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মোকাব্বির খান বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে একটি অস্পষ্টতা, আতঙ্ক ও হতাশা বিরাজ করছে। অনেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কখন ও কীভাবে নির্বাচন হবে- এ বিষয়ে সরকার তার অবস্থান পরিষ্কার করছে না। ২০১৪ সালে নির্বাচন বিএনপি প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতার দাপটে নির্বাচন করেছে। সরকার গঠনের যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দরকার সে সংখ্যক এমপি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সেই নির্বাচনে জনমতের সঠিক প্রতিফলন ঘটেনি। ২০১৮ সালে অধিকাংশ জায়গায় আগের রাতে ভোট হয়ে যায়। এখানেও জনমতের প্রতিফলন হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সংসদে বিল পাস হয়েছে দলিল যার জমি তার। সংবিধান অনুযায়ী জনগণ দেশের মালিক। কিন্তু রাষ্ট্রের এই মালিক গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তারা দলিল নিয়ে বসে আছে, কিন্তু মালিকানা তাদের হাতে নেই। সোনার বাংলার গণতন্ত্র আজ কোথায় যাচ্ছে?
জাতীয় পার্টির (জাপা) সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, আমাদের ফ্রি ফেয়ার নির্বাচন দরকার। এজন্য আমাদের প্রতিষ্ঠান আছে। টি এন শেসনের (ভারতের সাবেক সিইসি) মতো একজন শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন থাকবে এটা আমরা আশা করি। মেরুদণ্ড সোজা করে তারা নির্বাচন করবে। সরকার নির্বাচনের সময় রুটিন দায়িত্ব পালন করে। এটা নিয়ে আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ বারবার জোর করে সংসদকে অকার্যকর, সংসদ চলে না- নানা কথা বলে। এটা হলে তো নির্বাচন লাগে না। ভারতের নির্বাচন নিয়ে কেউ তো কোনোদিন প্রশ্ন করে না। তাহলে আজকে বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন কেন?
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই ফ্রি ফেয়ার ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে। নিরাপত্তা পাবে। প্রধানমন্ত্রী এটা চান। দেশবাসীও চায়। বিশ্ববাসীও চায়। এর বাইরে আর কিছু হবে না। এটা সবাইকে মানতে হবে। কেউ যদি সিট না পায় জোর করে সিট দেওয়া যায় না।
প্রার্থী হতে স্বতন্ত্র সদস্যের ভোটারদের সমর্থন থাকার বাধ্যবাধকতা সংবিধানের ব্যত্যয় উল্লেখ করে তা সংশোধনের দাবি জানান ফরাজী।
বিলের আলোচনায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন নিয়ে একটি মানসিক সমস্যা হয়। যারা নির্বাচিত হন তাদের কোনো নির্বাচনী এলাকা আছে কি না এটি তারা বুঝতে পারেন না। এটা নিয়ে তারা নিজেরাও বিব্রতবোধ করেন।
নির্বাচনে নারীদের বেশি সংখ্যক নমিনেশন দেওয়ার বিষয়টি বাধ্যবাধকতা করা যায় কি না সেই প্রস্তাব করেন জাপার এই সংসদ সদস্য।
মুজিবুল হক বলেন, উচ্চ আদালতের তিনজন বিচারপতিকে দুর্নীতির অভিযোগে দায়িত্ব পালন থেকে অনেক দিন ধরে বিরত রাখা হয়েছে। কিন্তু তারা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বিষয়টির সুরাহা করা প্রয়োজন।
রওশন আরা মান্নান বলেন, অনেকেই বলেন দীর্ঘদিন ধরে নারীরা উন্মুক্ত পদ্ধতিতে নির্বাচন করে জনপ্রিয়, তাদের কি দরকার আছে সংরক্ষিত আসনের। তাদের দুর্বল বলা যায় না। নারীরা অনেক বছর ক্ষমতায়, কিন্তু সবাই তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মতিয়া চৌধুরী কিংবা শিরীন শারমিন হতে পারবেন না।
সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। রওশন আরা মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলবো যদি সম্ভব হয় নারীদের সিট বাড়ানো হোক।
শেয়ার করুন