বিশ্বকাপের সবচেয়ে কঠিন গ্রুপের হয়ে পথচলা শুরু। এরপর চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোয় উঠে আসা।
সেখানে স্পেনের মতো দলকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা করা মরক্কো এবার জন্ম দিলো রূপকথার। পর্তুগালকে হারিয়ে আফ্রিকার প্রথম কোনো দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে আশ্রাফ হাকিমির দল।
বিশ্বকাপের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে আজ আল থুমামা স্টেডিয়ামে পর্তুগালকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে মরক্কো। দলের হয়ে প্রথমার্ধে একমাত্র গোলটি করেন ইউসেফ আল নেসিরি।
শেষ ষোলোর মতো কোয়ার্টারেও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে বেঞ্চে বসিয়ে খেলতে নামে পর্তুগাল। পঞ্চম মিনিটে ভালো সুযোগ পায় দলটি। তবে ব্রুনো ফের্নান্দেসের ফ্রি-কিক থেকে উড়ে আসা বল জোয়াও ফেলিক্স শট নিলেও তা ঠেকিয়ে দেন মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। দুই মিনিট পর কর্ণার থেকে উড়ে আসা বল নেসিরি হেড নিলে ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।
২৬তম মিনিটে হাকিম জিয়েশের ফ্রি-কিক থেকে আসা বল হেড নেন নেসিরি; যদিও তা লক্ষ্যে থাকেনি। ৪২তম মিনিটে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত গোল পায় মরক্কো। ইয়াহিয়া আত্তিয়াতের ক্রস ঠেকাতে ব্যর্থ হন দিয়েগো কস্তা। দৌড়তে থাকা নেসেরি দারুণ হেডে খুঁজে নেন ঠিকানা। একইসঙ্গে প্রথম ফুটবলার হিসেবে জাতীয় দলের জার্সিতে বিশ্বকাপে তিন গোল করার কীর্তি গড়েন মরক্কোর এই ফরোয়ার্ড।
বিরতির পর খেলতে নেমে প্রথমার্ধের মতোই ছুটতে থাকে মরক্কো। ৪৯তম মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত দলটি। জিয়াশের ফ্রি-কিক থেকে আসা বল বক্স থেকে কোনোভাবে বিপদমুক্ত করেন কস্তা। দুই মিনিট পর রুবেন নেভেসকে তুলে রোনালদোকে নামান পর্তুগিজ কোচ ফের্নান্দো সান্তোস। মাঠে নেমেই রেকর্ড গড়েন সাবেক এই রিয়াল মাদ্রিদ লিজেন্ড। আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলায় কুয়েতের ফরোয়ার্ড বাদের আল-মুতাওয়ারকে ছুঁয়ে ফেললেন তিনি।
৫৮তম মিনিটে গিয়ে ভালো সুযোগ পায় পর্তুগাল। তবে সতীর্থের ক্রস থেকে আসা বল হেডে লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হন গনসালো রামোস। ৮৩তম মিনিটে বক্স থেকে নেওয়া ফেলিক্সের বুলেট গতির শট ঠেকিয়ে দেন বোনো। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটেও আরও এক দুর্দান্ত সেভ দেন মরক্কোর এই গোলরক্ষক। রোনালদোর সেই শট আটকা পড়ে তার গ্লাভসেই। এতেই শেষ হয়ে যায় পর্তুগালের বিশ্বকাপ মিশন।
এই ম্যাচই বিশ্বকাপে রোনালদোর সম্ভাব্য শেষ ম্যাচ। তাইতো ম্যাচ শেষে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। কাঁদতে কাঁদতে টানেল দিয়ে চলে যান বর্তমান সময়ের সেরা এই স্ট্রাইকার। অপরদিকে রূপকথার জম্ম দিয়ে আনন্দ-উল্লাসে মাতে মরক্কো। সেমিফাইনালে ফ্রান্স অথবা ইংলিশদের মুখোমুখি হবে তারা।
শেয়ার করুন