উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা দেশ গড়বো সমাজ সেবায়’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সিলেটে পালিত হয়েছে জাতীয় সমাজসেবা দিবস। এ উপলক্ষে সোমবার ( ২ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সিলেটের জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজ সেবা কার্যালয় এক বর্ণাঢ্য র্যালি ও সিলেট কাজী নজরুল অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা ও মনোঞ্জ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো.নাসির উদ্দিন খান, সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মাসুদ রানা, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদ,সিলেট বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো.আব্দুর রফিক, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, গ্রামীণ জনকল্যাণ সংসদের নির্বাহী পরিচালক জামিল চৌধুরী।
সমাজসেবা অধিদফতরের আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রভাষক সানজিদা সুলতানা ও সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের সহকারী ব্যবস্থাপক লুৎফুর রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন-সিলেট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক নিবাস রঞ্জন দাস। সেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন- সিলেট বধির সংঘের সভাপতি সাংবাদিক এম আহমদ আলী, রহমানিয়া প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের সভাপতি আতাউর রহমান খান সামছু, সিলেট ইলেক্ট্রনিক মার্চ্চেন্ট এসাসিয়েশনের সভাপতি জুবায়ের আহমদ খান, এস ও এস শিশু পল্লীর সহকারী পরিচালক মো. মাযহারুল ইসলাম খান।
অনুষ্ঠানে অতিথির হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো.নাজিম উদ্দিন, মোহাম্মদ রফিকুল হক, প্রবেশন অফিসার তমির হোসেন চৌধুরী, সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতাল সমাজসেবা অফিসার জাহানারা বেগম, ডিফারেন্টলি এবল্ড ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান হাসিব রাজা চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে ইশারা ভাষা উপস্থাপন করেন-শেখঘাট বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক আবু তাহের মো.ইবনে সাঈদ। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন- সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতাল সমাজসেবা অফিসার খলিলুর রহমান, পবিত্র গীতা পাঠ করেন- প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র সিলেট এর প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ শংকর রায় প্রমুখ।
পরে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে কর্মসংস্থানের আওতায় আনা একজন নারী উদ্যোক্তার চায়ের দোকান উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। সবশেষে প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোঞ্জ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দর্শকদের মুগ্ধ করে।
বিশেষ অতিথি সিলেট জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য কাজ করছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন দেখছেন। এজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছেন। সবার সমঅধিকার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কাজ করছে। অটিজম বৈশিষ্টসম্পন্ন ব্যক্তির প্রতিভা বিকশিত করতে সরকারের বহুমুখি পদক্ষেপের কারণে মানুষ নানাবিধ সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। সরকার বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। ভাতা বৃদ্ধি, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল সুরক্ষা ট্রাস্ট, সেল্টার হোম ইত্যাদি বিষয়ে পর্যায় ক্রমে উদ্যোগ এব্যাপারে নির্দেশিকা প্রণয়ন করছে। কাউকে পিছনে ফেলে নয়, সবাইকে এক সাথে নিয়ে সামনের দিকে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় ধারায় নিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি মানবিক রাষ্ট্র ও সমাজ বিনির্মানের স্বপ্ন দেখতেন। তিনি সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি মানুষের বিভিন্ন মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করে গেছেন। সুফল এখন এদেশের মানুষ ভোগ করছে। সকল ক্ষেত্রে তাঁর দূরদর্শিতা ছিল। জাতির পিতার মননে ছিল মানুষের কল্যাণ। এরই ধারাবাহিকতায় তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ হাতের ছোঁয়ায় দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। তিনি সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনীর আওতায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স্ক ভাতা,বিধবা ভাতা,প্রতিবন্ধী ভাতা,তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভাতাসহ বিভিন্ন্ কার্যক্রম সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।এজন্য বিশ্বের দরবারে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রুল মডেল। প্রধানমন্ত্রীর ভিশন সবাইকে এক সাথে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। কাউকে পিছিয়ে রেখে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
শেয়ার করুন