সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মিকে (এএ) দমনে অভিযান চালাতে গিয়ে যদি মিয়ানমার বাংলাদেশ সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ না করে, তবে বাংলাদেশও প্রয়োজনে জবাব দিতে প্রস্তুত। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দীন আহমেদ এ কথা বলেছেন। মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জানান, পার্বত্য বান্দরবান এলাকায় মিয়ানমারের গোলা বাংলাদেশ সীমান্তে পড়লে এক রোহিঙ্গার মৃত্যু, মাইন বিস্ফোরণে এক বাংলাদেশির পা উড়ে যায় এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনার পর দেশটির জান্তাবাহিনীর গোলাগুলি এবং বাংলাদেশ সীমান্তের আশপাশে যুদ্ধবিমান ও ড্রোন পরিচালনার বিষয়ে প্রতিবাদ করে মিয়ানমারকে কড়া বার্তা পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান বলেছেন, ‘যদি প্রয়োজন হয় তবে আমরা জবাব দিতে প্রস্তুত। আমি আমাদের সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’
সেনাপ্রধান বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মতিক্রমে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন এবং সীমান্তে চলমান ঘটনাগুলোর বিষয়ে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠিয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল নাগাদ মিয়ানমারের বাংলাদেশসংলগ্ন সীমান্তে গোলাগুলি আরও বেড়েছে।
মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনী এবং রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) উত্তর রাখাইনে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘাতে লিপ্ত হয়েছে। গত আগস্ট থেকেই বাংলাদেশ তার ভূখণ্ডে যুদ্ধবিমান ও ড্রোন পরিচালনা, সীমান্তে গুলি চালানো এবং মর্টারশেল ও মেশিনগান ব্যবহারের বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের কাছে অভিযোগ করে আসছে।
চলতি মাসের ১৬ তারিখে স্থানীয় সময় রাত ৮টা ১৫ মিনিট থেকে ৯টার মধ্যে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তিনটি মর্টারশেল এসে পড়ে। এ ঘটনায় মো. ইকবাল নামে ১৭ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে অংঞাথাইন তঞ্চঙ্গ্যা (২৫) নামের এক বাংলাদেশি পা হারিয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হন আরও কয়েকজন।
ওই ঘটনার পরপরই বাংলাদেশ সীমান্তে বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও জলসীমায় কোস্টগার্ডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
শেয়ার করুন