ফেরারি আসামি প্রার্থী হতে পারবেন না

বাংলাদেশ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেরারি বা পলাতক আসামিদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকছে না। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) নতুন বিধান অনুযায়ী, যেসব ব্যক্তি আইনগতভাবে ফেরারি হিসেবে বিবেচিত, তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

এ বিষয়ে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিভ্রান্তি দূর করতে বিশেষ পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরিপত্রে ‘পলাতক আসামি’ ও ‘অভিযুক্ত আসামি’ এই দুটি শব্দের স্পষ্ট ব্যাখ্যার পাশাপাশি কারান্তরীণ ও জামিনপ্রাপ্ত প্রার্থীদের হলফনামা দাখিল সংক্রান্ত নির্দেশনাও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) জারি করা এ বিশেষ পরিপত্র ইতোমধ্যে দেশের সব রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এ উপলক্ষে প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল-সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্পষ্টীকরণ দেওয়া হলো।

১. মনোনয়নপত্রের সংযুক্তি-১ অনুযায়ী প্রার্থী প্রদত্ত হলফনামায় উল্লিখিত ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে যারা জামিনে মুক্ত, তাদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আদালতের জামিন আদেশের সত্যায়িত কপি দাখিল করা ঐচ্ছিক বলে বিবেচিত হবে। তবে, যারা কারাগারে অন্তরীণ, তাদের হলফনামা অবশ্যই জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সত্যায়িত হতে হবে।

২. হলফনামার অনুচ্ছেদ ৩(গ)-এ ‘অভিযুক্ত’ বলতে সেই ব্যক্তিকে বোঝানো হবে, যার বিরুদ্ধে আদালত কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়েছে।

৩. মনোনয়ন ফরমের তৃতীয় অংশের ৪ নম্বর অনুচ্ছেদে নির্বাচনি ব্যয় নির্বাহের জন্য যে ব্যাংক হিসাব নম্বর উল্লেখ করতে হবে, তা প্রার্থী নিজে অথবা তার মনোনীত নির্বাচনি এজেন্টের অ্যাকাউন্ট হতে হবে।

৪. ‘পলাতক আসামি’ বলতে সেই ব্যক্তিকে বোঝানো হবে, যিনি জামিনে মুক্ত হওয়ার পর আত্মগোপনে গেছেন অথবা যিনি শুরু থেকেই আদালতে অনুপস্থিত থেকে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে হাজির না হয়ে পলাতক অবস্থায় আছেন।

নির্বাচন কমিশনের এই পরিপত্রের মাধ্যমে ফেরারি আসামিদের প্রার্থী হওয়ার পথ কার্যত বন্ধ হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও আইনের শাসন আরো জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *