জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা, বাঙালির স্বাধীনতার লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনে নেপথ্যের প্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী আজ।
১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নিয়েছিলেন মহীয়সী এই নারী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একাধিক লেখনীতে বাঙালির গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে ফজিলাতুন নেছা মুজিবের নেপথ্য ভূমিকা উঠে এসেছে। আন্দোলন-সংগ্রামে নীরব সমর্থন, শক্ত হাতে সংসার মোকাবেলা এবং সন্তানদের মানুষ করার পাশাপাশি তিনি বঙ্গবন্ধুকে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করতে উৎসাহ দিয়ে গেছেন।
স্বামীর জেল-জুলুম এমনকি ফাঁসি হতে পারে জেনেও তাকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেননি। বরং ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তার বার্তা দলের নেতাকর্মীদের পৌঁছে দিতেন তিনি। ক্ষেত্রবিশেষে নেতাকর্মীদের পরামর্শ এমনকি সিদ্ধান্তও দিয়েছেন অকুতোভয় এই নারী। বলা হয়ে থাকে, শেখ মুজিব দীর্ঘ আপোষহীন লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে শুধু বাঙালি জাতির পিতা নন, বিশ্ববরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন তারই প্রেরণায়।
বঙ্গবন্ধুর পুরো রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন বেগম মুজিব। বাঙালি জাতির মুক্তি সনদ ছয়-দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারে বারে পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি, তখন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বঙ্গমাতার কাছে ছুটে আসতেন। তিনি তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা বুঝিয়ে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যোগাতেন।
আগরতলা যড়যন্ত্র মামলায় প্যারোলে বঙ্গবন্ধুর মুক্তি নিয়ে একটি কুচক্রী মহল বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল। তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
এই মহীয়সী নারী পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সপরিবারে খুনি চক্রের নির্মম বুলেটের আঘাতে শহিদ হন।
কর্মসূচি
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৮টায় রাজধানীর বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন, কোরআন খতম, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল আওয়ামী লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর।
বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে বিজয়-লক্ষ্মী নারী’ শীর্ষক আলোচনা সভা করবে আওয়ামী যুবলীগ। দুপুর ২টায় বাদ জোহর স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় খাদ্য বিতরণ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। বিকেল ৩টায় আলোচনা সভা করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শ্রমিক লীগ।
এছাড়া, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় দিনব্যাপী ফ্রি হেলথ ক্যাম্প আয়োজন করবে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ। বঙ্গমাতা শহিদ শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও ‘বাংলাদেশের মাতা, বাংলাদেশের নেতা’ শীর্ষক ছাত্রী সমাবেশ করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শেয়ার করুন