স্বীকৃতি বিশ্বাস স্টাফ রিপোর্টারঃ
২০১১ সালে যশোরে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের পর এক দশকের অধিক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও যশোর মেডিকেল কলেজ ৫শত শয্যায় উর্ণীত না হওয়ায় গণ জমায়েত ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় এবং মানববন্ধন শেষে যশোর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে।
আজ রবিবার (১৩ নভেম্বর) দুপুর বারটায় ডিসি অফিস চত্বরে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।উক্ত কর্মসূচিতে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাসহ আপামর জনগণ একাত্মতা প্রকাশ করেন।
যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির সদস্য জিল্লুর রহমান ভিটুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জমায়েতে সভাপতিত্ব করেন যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান মজনু।উল্লেখিত দাবি বাস্তবায়নে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন-বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবল কাবির জাহিদ, জনউদ্যোগ যশোরের আহ্বােয়ক নাজির আহমেদ, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারাজি আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সুকুমার দাস, সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম তারু, তসলিম-উর-রহমান , হাচিনুর রহমান, মাষ্টার হাফিজুর রহমান , হারুন অর রশিদ,দীপঙ্কর দাস রতন , এ্যাড. আমিনুর রহমান হিরু , মফিজুর রহমান হিমু,শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বুলু, আইডিইবি যশোরের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, জয়তী সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস ইভা, আইইডি যশোরের ব্যবস্থাপক বিথিকা সরকার, এসএসসি- ৯১ এর সমন্বয়ক রাশেদ চৌধুরী প্রমুখ।
জমায়েতে বক্তারা বলেন- আমরা ১২ বছর আগে একটা আছাড় ( হাসপাতাল) ছাড়া দা ( মেডিকেল কলেজ)পেয়েছি । দয়া করে আছাড়টা দেন । আছাড় ছাড়া দা অচল ।
আরও বলেন- আমাদের ৬ এমপি , মন্ত্রী , সভাপতি , মেয়র সাহেবদের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর , থাইল্যান্ড , দিল্লি আছে । আমাদের তো ২৫০ শয্যা , তাও আবার ঢাকা রেফার্ড । আমাদের অন্ততঃ যশোর মেডিকেল কলেজে রেফার্ডের সুযোগ করে দিন ।
যশোরের ক্ষেত্রে সরকারের দ্বিচারিতা দেখছি । ৫০০ শয্যার হাসপাতাল না থাকলে মেডিকেল কলেজ হতে পারে না । আর যশোরে ৫ শত শয্যা ছাড়া তিন তিনটি মেডিকেল কলেজ চলছে ।
বক্তারা আগামী ২৪ নভেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যশোর সফরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘোষণার দাবি জানান।
জমায়েত শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নিকট স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।
এ সময় সিভিল সার্জন ও যশোর পুলিশ সুপার জনাব প্রলয় কুমার জোয়ার্দার উপস্থিত ছিলেন
স্মরক কলিপিতে বলা হয়েছে- ২০১১ সালে যশোর মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে কলেজটির সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। পরবর্তীতে শহরের শংকরপুর এলাকায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে কলেজ স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে কলেজে চার শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। তবে দীর্ঘ ১০ বছরেও এখানে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চালু করা হয়নি। যদিও যশোরের পরে স্থাপিত পাশের জেলা সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়ায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, মেডিকেল কলেজের সঙ্গে হাসপাতাল না থাকলে সেই মেডিকেল কলেজ পূর্ণাঙ্গ হয় না। কারণ শিক্ষার্থীদের তত্বীয় বিষয়ের পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাও অনিবার্য। আর এই শিক্ষার জন্য মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের কলেজ থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে যেতে হয়। কিন্তু এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় শিক্ষার্থীরা অনেক ক্ষেত্রেই বিড়ম্বনায় পড়েন। সাধারণ মানুষও বঞ্চিত হন মেডিকেল কলেজের মতো পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা থেকে। এজন্য যশোরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হলে শিক্ষার্থীদের উপকারের পাশাপাশি বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের সাধারণ মানুষ বর্তমানের চেয়ে অধিকতর চিকিৎসাসেবা লাভ করত।
শেয়ার করুন