
সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ-রাজনগর-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর অবস্থিত ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুর সংযোগ সড়কটি ফের ধসে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিভাগীয় পর্যায়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সপ্তাহ আগে গাড়ুলিছড়া দিয়ে পানি নিষ্কাশনের সময় সেতুর সংযোগ সড়কের সুরক্ষায় ব্যবহৃত গাছের আড় (গাইড লাইন) ভেঙে যাওয়ায় এই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে সংযোগ সড়কসহ গোটা সেতুটিই ধসে পড়ার আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা। এতে করে দক্ষিণ সিলেটের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, এক বছর আগে কুশিয়ারা নদী তীরের গাড়ুলিছড়া স্লুইস গেট দিয়ে পানির তীব্র স্রোতে পার্শ্ববর্তী সেতুর সংযোগ সড়কের পাথর ও মাটি ধসে ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সিলেট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ গাছের আড় দিয়ে সড়কটি রক্ষার অস্থায়ী উদ্যোগ গ্রহণ করে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত পাঁচ বছরে গাড়ুলিছড়ার পানি নিষ্কাশনের স্থানটি উত্তর থেকে দক্ষিণে সরে যাওয়ায় এবং পলি মাটি ভরাট হওয়ায় দক্ষিণ দিকে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। সম্প্রতি এই ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করায় সেতু এলাকাজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরের পার্শ্ববর্তী মোমিনপুর ও চানপুর এলাকায় কুশিয়ারা নদীর ওপর ২৬৭ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি নির্মিত হয়েছিল। ২০ বছর আগে ২৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণ করে সওজ।
১৯৮৭ সালে প্রথম সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা ও স্থান নির্ধারণ করা হয়। প্রায় এক যুগ পর, ২০০১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। অর্থ সংকটের কারণে এক সময় নির্মাণকাজ বন্ধ থাকলেও, পরে চার দলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালের ১২ জানুয়ারি ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুটি যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা হয়।
গত ২০ বছর ধরে সিলেট ও মৌলভীবাজারের লাখ লাখ মানুষের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে এই দুই জেলার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং ব্যাপক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মাইজগাঁও ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের বাসিন্দা সেজু আহমদ জানান, ভাঙনটি কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে গাড়ুলিছড়ার সংযোগস্থলে হওয়ায় সবাই আতঙ্কে আছেন।
সওজ বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন জানান, কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
শেয়ার করুন


