সিলেটে কোরবানির ঈদের ছুটি শুরুর পর থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। ঈদের আগের দিন থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও ঈদের পরদিন শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির দাপটে এবার সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের তেমন উপস্থিতি লক্ষ করা যায়নি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয় জানিয়েছে, সিলেটে ঈদের আগের দিন বুধবার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ৩৩ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঈদের দিন সকালে কিছুক্ষণ বৃষ্টি ছিল না। তবে সকাল ১০টার পর বৃষ্টি শুরু হয়। সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ৩০ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। শুক্রবার ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টির পর দুই ঘণ্টা থেমে আবার বৃষ্টি শুরু হয়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আবার বৃষ্টি শুরু হয়।
শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে পরবর্তী ১২ ঘণ্টায় সিলেটে ৭৩ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন। তিনি বলেন, কাল শনিবারও সিলেটে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
টানা বৃষ্টিতে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের উপস্থিতি খুব একটা লক্ষ করা যায়নি। এবার কোরবানির ঈদে বৃষ্টির প্রভাব থাকায় পর্যটকদের তেমন সাড়া মেলেনি। কোম্পানীগঞ্জে সাদা পাথরের পর্যটনকেন্দ্রে সকালে পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল হাতেগোনা। তবে দুপুরের দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে কিছু পর্যটক সেখানে ঘুরতে যান।
কোম্পানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা কবির আহমদ বলেন, ঈদের দিন সাধারণত পর্যটক উপস্থিতি কম থাকে। অনেকে আশা করেছিলেন ঈদের পরের দিন পর্যটক উপস্থিতি বাড়বে। কিন্তু সেভাবে কেউ আসেনি। আজ সকালে হাতেগোনা কয়েকজন এসেছিলেন। দুপুরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাতা নিয়ে অনেকেই সেখানে হাজির হয়েছিলেন। তবে বিকেল গড়াতেই এলাকা জনশূন্য হয়ে পড়ে।
জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের উপস্থিতি খুব একটা নেই বলে জানিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দা আরিফ আহমেদ। তিনি বলেন, দু-তিন দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য পর্যটকদের তেমন একটা উপস্থিতি নেই। এরপরও তাঁরা নিরাশ হচ্ছেন না।
এদিকে রাতারগুলেও বৃষ্টির প্রভাবে পর্যটকদের উপস্থিতি কম ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। রাতারগুল গ্রামের বাসিন্দা সোনা মিয়া বলেন, কিছু পর্যটক এসেছেন। তবে বৃষ্টির কারণে সেটা আশানুরূপ না। তবে আজ বিকেলে সিলেটের চা-বাগানগুলোতে পর্যটকদের ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। শহরতলির বিমানবন্দর সড়কের পাশে ও সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশের চা-বাগানগুলোতে বিনোদনপ্রেমীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তবে তাঁদের অধিকাংশই স্থানীয় পর্যটক বলে জানা গেছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ সব দিক বিবেচনায় সতর্ক আছে উপজেলা প্রশাসন। নদের পানি বাড়লে যাতে তাঁরা ঝুঁকি নিয়ে সেখানে যাতায়াত না করেন, এ জন্য নৌকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে লাইফ জ্যাকেট রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জাফলং ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. রতন শেখ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে।
শেয়ার করুন