সিলেটে অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছে পরিবহন শ্রমিকরা। বৃহত্তর সিলেটজুড়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছেন নেতারা। তাদের উপর মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত মামলা ও সিলেটের পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফকে প্রত্যাহারের দাবি তাদের। এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন নেতারা। অপর দিকে হঠাৎ এমন আন্দোলনে অবর্ননীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ জনগন।
জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিলেট মহানগরীর চন্ডিরপুল পয়েন্টে সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের বিভাগীয় সভাপতি ময়নুল ইসলাম, সেক্রেটারি আব্দুল মুমিন, পরিবহন শ্রমিক নেতা জাকারিয়া আহমদ বিরুদ্ধে শাহাব উদ্দিন নামক একজন পরিবহন নেতাকে মারধোর, টাকা ছিনতাই, রোগীর মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেয়ার মতো গুরুতরো অভিযোগে মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা ( ২১/১৪/০৯/২২) দায়ের করা হয়। শাহাব উদ্দিন নিজে বাদী হয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি দায়ের করেন।
এই মামলা এবং গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রশাসনের সাথে তাদের ৬ দফা দাবি বাস্তবায়ন নিয়ে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেসব ব্যাপারে আলাপ করতে আজ বৃহস্পতিবার ( ২২ সেপ্টেম্বর ) সিলেটের পুলিশ কমিশনার নিশারুল আরিফের কাছে গিয়েছিলেন পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
কিন্তু সেখানে আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি। বরং পুলিশ কমিশনার তাদের গ্রেফতার এবং আরও মামলা দায়েরের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি ময়নুল ইসলাম ও সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন।
তারা জানান, পুলিশ কমিশনারের এমন হুমকির প্রেক্ষিতে শ্রমিকরা এখন বিক্ষুব্ধ। তাই তারা রাস্তায় নেমে এসেছেন। যতক্ষণ নেতৃবৃন্দের উপর দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সিলেটজুড়ে এই অবরোধ ও কর্মবিরতি চলবে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সন্ধ্যা ৭টা থেকে কার্যত সিলেট মহানগরী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। তারা মুহুর্মুহু শ্লোগান দিচ্ছেন। নগরীর বালুচর পয়েন্টে টায়ার জালিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী।
আবার হঠাৎ করে, কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এমন কঠিন অবরোধ শুরু করায় অবর্ননীয় দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী এবং বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ঘর ছাড়া সাধারণ মানুষ। তারা চরম হাতাশা প্রকাশ করেছেন।
কোথাও কোথাও হয়রানির শিকার সাধারণ মানুষের সাথে পরিবহন শ্রমিকদের বাকবিতন্ডার ঘটানাও ঘটছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
শেয়ার করুন