সিলেটে শ্রমিক নেতাদের পাল্টাপাল্টি মামলা প্রত্যাহার ও এমএমপি কমিশনারের অপসারণের দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে সমগ্র সিলেট অচল হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলোচনার আহ্বান করা হলে শ্রমিকরা এতে সম্মতি জ্ঞাপন করছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে আলোচনায় বসবেন পরিবহন শ্রমিক ও প্রশাসনের লোকজন।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত পৌণে দশটায় এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অতিরিক্ত দায়িত্ব মিডিয়া) সুদ্বীপ দাস সিলেটলাইন-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন- আমরা আন্দোলনকারী আলোচনার আহ্বান জানালে তারা এতে সম্মতি প্রদান করেছেন। শিগগিরই আমরা আলোচনায় বসবো।’
এরআগে- বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৭ টার দিকে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের উপর দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও এসএমপি কমিশনারের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তারা সিলেট নগরের সবকয়টি প্রবেশদ্বার ব্যারিকেট দিয়ে বন্ধ করে ফেলেন। এবং সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন। আন্দোলনের কারণে সিলেট শহরে কোনো ধরনের যানবাহন প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে প্রতিটি সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যানজটে শতশত গাড়ি আটকা পরেছে। দূরপাল্লার বাসসহ সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
জানা যায়- গত ১৪ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ সুরমা থানায় মারপিট ও টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগে লেগুনা শ্রমিক মো. শাহাব উদ্দিন সিলেট জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম, সিএনজি অপটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাকারিয়া আহমদ, হিউম্যান হুলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল মিয়া মইনসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা দায়ের’র ৮ দিন পর বিষয়টি নজরে আসে শ্রমিক নেতাদের। পরে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার নিশারুল আরিফের সঙ্গে দেখা করতে যান শ্রমিক নেতারা। এসময় পুলিশ কমিশনার তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এরপ্রেক্ষিতে আন্দোলনে নেমেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তারা সিলেট শহরের সবকয়টি রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন। এসময় রাস্তার মধ্যখানে যানবাহন দাঁড় করিয়ে সড়ক বন্ধ করে দেন পরিবহন শ্রমিকরা। এছাড়াও টায়ার জ্বালিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দেন তারা। এসময় মামলা প্রত্যাহার, এসমএমপি কমিশনারের অপসারণের দাবিসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা গেছে তাদের।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম বলেন- ‘আমাদের নামে মামলা হয়েছে জেনে কিছু শ্রমিক নেতা এসএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। এসময় তিনি তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন। যা আমাদের শ্রমিকরা মেনে নেয় নি। তারা বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পরেছে। মামলা প্রত্যাহার ও এসএমপি কমিশনারের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চলমান থাকবে।’
তিনি আরও বলেন- ‘যিনি আমাদের নামে মামলা করেছেন তাকে আগেই শ্রমিক সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই কারণে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের নামে চাঁদাবাজি ছিনতাইয়ের অভিযোগে মিথ্যে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত ছাড়াই গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন কুমার চৌধুরী বলেন- ‘শ্রমিক নেতারা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে থানায় দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ মামলাগুলো তদন্ত করছে। মামলার এতোদিন পর পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলন অযৌক্তিক।’
শেয়ার করুন