সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান হত্যাকান্ড, সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৬ জন

সিলেট

সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশী নির্যাতনে রায়হান আহমদ (৩৪)  হত্যাকান্ডের তিন বছর পূর্ণ হয়েছে আজ।

২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতন করা হয়। 

এই হত্যাকান্ডের তিন বছর হলেও সাক্ষ্যগ্রহণ এখনো শেষ হয়নি। মামলার ৬৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রায়হান হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এম এ ফজল চৌধুরী।

তিনি বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণ দ্রুত সম্পন্ন হবে এবং অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যাপারে আমি আশাবাদী।

রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, মৃত্যুর মাত্র ১৫ মাস আগে বিয়ে করেছিল রায়হান। মৃত্যুর মাত্র দু’মাস আগে তার মেয়ের জন্ম হয়েছিল। পিতার আদর ছাড়াই সে বড় হচ্ছে।

২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদকে নির্যাতন করা হয়। ১১ অক্টোবর তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে। তারা ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে (৩২) প্রধান অভিযুক্ত করা হয়।

অন্যরা হলেন সহকারী উপপরিদর্শক আশেক এলাহী (৪৩), কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ (৩২), টিটু চন্দ্র দাস (৩৮), সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন (৩২) ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান (৩২)। গত বছরের ১৮ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় অভিযুক্ত এক পুলিশ সদস্য উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে রয়েছে। আবদুল্লাহ আল নোমান এখনো পলাতক। বাকি চার আসামি জেলহাজতে রয়েছেন। আবদুল্লাহ আল নোমানের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও মালামাল ক্রোকের আদেশ তামিল করেছে পুলিশ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *