সিলেটে হকারদের কাছে চাঁদাবাজি : বিশাল অংকের টাকা নেন সিনিয়র ২ বিএনপি নেতা

সিলেট

চাঁদা না দেওয়ায় হকারকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে সিলেটের এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ এনে শুক্রবার রাতে নগরের জিন্দাবাজার এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন হকাররা। এরপর শুক্রবার মধ্যরাতে অভিযুক্ত সিলেট মহানগর যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়দীপ চৌধুরী মাধবকে দল থেকে বহিষ্কার করে যুবদল।

তবে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে এ ব্যাপারে ফেসবুকে এক পোস্টে নিজের অবস্থান তুলে ধরছেন যুবদলের এই নেতা। এতে কয়েকজন বিএনপি নেতাকেও অভিযুক্ত করেছেন তিনি।

ফেসবুকে জয়দীপ চৌধুরী মাধব লিখেন-
‘আমি আমার রাজনৈতিক ঠিকানা জিন্দাবাজার সিতারা ম্যানশনে প্রতিদিন আমার নেতাকর্মীদের নিয়ে বসি। বেশ কিছু দিন থেকে আমার কাছে তথ্য ছিল যে ফুটপাতের হকারদের থেকে আমার নাম ভাঙিয়ে কতিপয় ব্যাক্তি চাঁদা তুলে নেন, বিষয়টা আমি খতিয়ে দেখতে আমার ইউনিটের জুনিয়র ভাইদের নির্দেশ প্রদান করি। জুনিয়রদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আমি নিশ্চিত হই যে, কতিপয় ব্যাক্তি ফুটপাতের হকারদের থেকে আমার নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায় করে এবং যার এক বিশাল অংশ সিনিয়র দুজন বিএনপি নেতার কাছে পৌঁছে যায় এবং লোকাল লামাবাজারের দুই নেতাসহ বাকি অংশের টাকা ভাগাভাগি করে’।

মাধব লিখেন- ‘সুত্র মতে আমার কাছে খবর আসে আজকে সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে এক ব্যাক্তি ফুটপাতে অবস্থানরত মাথাপিছু সকল হকার হতে ১০০টাকা করে চাঁদা সংগ্রহ করছে, নিশ্চিত হয়ে আজকে আমি আমার জুনিরদের তাকে হাতেনাতে ধরতে বলি এবং তাকে ধরার পরে নিশ্চিত হই যে সে নিজে একজন হকার এবং বেশ কিছু হকার থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে পুলের মুখের দিকে চাঁদা আদায় করছে। আমার জুনিয়র নেতা-কর্মিরা তাকে হাতে নাতে চাদা আদায়কালে পাকরাও করে এবং তার থেকে ১৭ হাজার ৮০০টাকা পাওয়া যায়।

এই যুবদল নেতা আরও লিখেন- ‘যেহেতু আমরা সিতারা ম্যানশন জিন্দাবাজারে রাজনৈতিক অবস্থান তাই তাকে সেখানে নিয়ে আসে এবং সে স্বীকার করে ‘বৈষম্য বিরোধী হর্কাস দল’ নামে ভুয়া সংগঠনের হয়ে চাঁদা তুলে এবং সে দাবি করে প্রাপ্ত টাকার ১০ হাজার টাকা তার নিজের বিজনেসের।

পরিশেষে যারা এই সংগঠন চালায় কিংবা যে নেতারা এই চাঁদার টাকার ভাগ নেন তাদের নাম বিষয়-বস্তু মিডিয়ার মাধ্যমে পাব্লিক করার আগ মূর্হুতে চাঁদাবাজ নেতাদের আদেশে হকার নেতারা জিন্দাবাজার অবস্থান করে এবং আমি চাঁদা চেয়েছি বলে পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তুলে যার কারনে আমি সব কিছু মিডিয়ার মাধ্যমে প্লাব্লিকলি করতে পারিনি এবং আমার বক্তব্য না নিয়ে সেই নেতারা চাপ দিয়ে আমাকে দোষী সাবস্ত্য করে চাদাবাজ রুপ দিয়ে বহিস্কার করেন।’

প্রসঙ্গত, ওই যুবদল নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা না দেওয়ায় দুজন হকারকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ এনে শুক্রবার রাত ৯টা থেকে জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করেন শতাধিক হকার। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসলেও বিষয়টি সুরাহা হয়নি। উল্টো পুলিশকে ধাওয়া দেন বিক্ষোব্ধ হকাররা। পরে পুলিশ সদস্যরা ওই এলাকা ছেড়ে যান।

আন্দোলনরত হকারদের অভিযোগ, সম্প্রতি যুবদল নেতা মাধব তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছেন। চাঁদা না দেয়ায় ওই ব্যক্তি শুক্রবার দুজন হকারকে উঠিয়ে নিয়ে যান।

এরপর মধ্যরাতে অভিযুক্ত সিলেট মহানগর যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়দীপ চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। যুবদলের কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক বলেন, এ ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় অভিযোগ দেননি। অভিযোগ দেওয়া হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *