সিলেট-৩ আসনের সবার চোখ নির্বাচন কমিশনে

সিলেট

সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনের জনগণের সবার চোখ এখন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দিকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনের তিন প্রার্থী দ্বারস্থ হয়েছেন ইসি’র। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ হাবিবুর রহমান হাবিবের প্রার্থিতার বৈধতার বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল করেন ওই আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। তিনি অভিযোগ করেছেন, নৌকার প্রার্থী হাবিব যুক্তরাজ্যের নাগরিক। গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশনে আপিলটি দায়ের করেছেন আতিক। রিটার্নিং কর্মকর্তার যাচাই-বাছাইয়ে হাবিব ও আতিক বৈধ প্রার্থী।

এর ফলে এ আসনের তিন উপজেলার মানুষের চোখ এখন ইসিতে। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরীও দ্বারস্থ হয়েছেন ইসির। আতিকের অভিযোগ, সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের ভোটার। নির্বাচন কমিশন আইনে আছে দুই দেশের ভোটার হলে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা থাকবে না। তাই হাবিবের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করেছেন আতিক।

এর আগেও ২০২১ সালে সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে একই অভিযোগ করেন আতিক। তখনও নৌকার প্রার্থী ছিলেন হাবিব। লাঙ্গলের প্রার্থী আতিকের অভিযোগ ছিল হাবিবের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে। ওই বছরের ২৩ জুন নির্বাচন কমিশনের আপিল শুনানিতে হাবিবের মনোনয়ন বৈধতা পায়।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে ত্রুটি থাকার অভিযোগে দুলালের প্রার্থিতা বাতিল করেন সিলেট জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছেন ওই স্বতন্ত্র প্রার্থী। আগামী ১২ ডিসেম্বর আপিল আবেদন শুনানি করে সিদ্ধান্ত দেবে নির্বাচন কমিশন।

এ আসনে নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে না আসায় দলীয় নেতাকর্মীরা নীরব থাকলেও আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ঘিরে সর্বত্র চলছে আলোচনা। হাট-বাজারের চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ভোটাররা প্রার্থীদের নিয়ে নানা আলোচনা-সামলোচনা করছেন। হিসাব কষছেন যোগ্য ব্যক্তিকে নির্বাচিত করতে। তবে তিন প্রার্থী ইসির দ্বারস্থ হওয়ায় মনোনয়নের বৈধতা মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা  কেন্দ্র কমিটি গঠন করতে ইউনিয়নে ইউনিয়নে করছেন বর্ধিত সভা। থেমে নেই জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরাও। ডা. দুলালের মনোনয়ন আপিলের রায়ের দিকে চেয়ে আছেন তার কর্মী-সমর্থকরা।

এ বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি। নির্বাচন কমিশনে হাবিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার বিষয়ে আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘হাবিবের প্রার্থিতা কোনোভাবেই বৈধ হতে পারে না। বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী- যদি কারো দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকে এবং এই দেশে তিনি সংসদ সদস্য প্রার্থী হতে চান তবে ৬ মাস আগে সে দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসে সেই নাগরিকত্ব বাতিলের আবেদন করে সারেন্ডার করতে হবে। তখন দূতাবাস থেকে একটি কাগজ দেয়া হবে। সেই ডকুমেন্ট প্রার্থী নির্বাচনী হলফনামার সঙ্গে সংযুক্ত করে দিবেন। কিন্তু হাবিবুর রহমান হাবিব দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টিই হলফনামার কোথাও উল্লেখ করেননি।’

এ আসনে ৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেন। হাবিব, আতিক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনোয়ারা হোসেন আফরোজ ও ইসলামী ফ্রন্টের শেখ জাহেদুর রহমান মাসুমের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *