সুনামগঞ্জ আদালত চত্বরে খুন আসামীরা অধরা সিলেটের ডিআইজি ও র‌্যাব’র হস্তক্ষেপ কামনা

সুনামগঞ্জ

 

সুনামগঞ্জ আদালত চত্বরে প্রকাশ্যে হত্যাকারীদের দ্রæত গ্রেফতার ও মামলার সুষ্ঠু তদন্তে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ও র‌্যাব-৯ বরাবরে আবেদন করেছেন নিহত মিজানুর হোসেন খোকনের লন্ডন প্রবাসী ভাই আনোয়ার হোসেন। তিনি রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ও র‌্যাব-৯ এ পৃথক আবেদন দাখিল করেন।
তিনি লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেন,তাদের গ্রামের বাড়িসহ সকল সহায়-সম্পত্তি ও পরিবারের লোকজনের চিকিৎসাসহ সবধরণের কাজ পরিচালনা করতেন তার ভাই খোকন। তাদের সম্পত্তি ও বাড়িঘর দখল করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরণের কৌশল ও প্রকাশ্যে প্রাণে হত্যার হুমকিসহ চাঁদা দাবি করে আসছিল জগন্নাথপুর থানার গলাখাল গ্রামের মৃত মহিবুর রহমানের ছেলে ফয়েজ আহমেদ,আফরোজ মিয়ার ছেলে সেবুল মিয়া, সাজিদ মিয়া, বাদশা মিয়ার ছেলে শাহান মিয়া, মৃত লাল মিয়ার ছেলে ঈসরাইল ও ওমান প্রবাসী বাদশা এবং তাদের পালিত সন্ত্রাসীরা। এ সকল বিষয়ে খোকন বাদি হয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে জগন্নাথপুর থানার (সি আর মামলা নং-৭২/২২ইং) দাখিল করেন। মামলা দাখিলের পর থেকে ওমান থেকে ফোন করে বাদশা বিভিন্ন জনকে বলে খোকনকে যে কোনভাবে খুন করিয়ে মামলা করার স্বাদ মিটিয়ে দিবে। এছাড়া তাদের চাচাতো ভাই মাসুক ও তার ছেলেদের দেখলেই ফয়েজ গংরা অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও প্রাণে হত্যার হুমকি দিত। এ ঘটনায় মাসুক মিয়া বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত শেষে সত্য প্রমাণিত হয়। ফলে আদালতে (জগন্নাথপুর থানার নন জি, আর ১৬৬/২২ইং) মামলায় প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলাগুলো হওয়ার পর থেকে ওমান প্রবাসী বাদশার হুকুমে ফয়েজ গংরা খোকনকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। গত ২১ জুলাই আদালতে নন জিআর-১৬৬/২২ মামলার ধার্য তারিখ ছিল। সেই তারিখে আদালতে হাজিরা দিতে যায় ফয়েজ, ঈসরাইল, শাহান, সাজিদ, সেবুল। ওই তারিখে খোকন আদালতে মাসুকের সাথে যান, তার দাখিলকৃত মামলার খবর নিতে। মাসুকের মামলার আসামী ফয়েজ গংরা হাজিরা শেষে পরিকল্পনা মাফিক খোকনকে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে, সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতির বারান্দার সামনে জনসম্মুখে ছুরি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে, ঘাড়ে, দুই হাতে উপোর্যপুরি আঘাত করে নির্মমভাবে খুন করে পালিয়ে যাওয়ার সময় আদালতপাড়ায় থাকা উপস্থিত লোকজন খুনি ফয়েজ, সেবুল ও সাজিদকে ধারালো অস্ত্রসহ আটক করেন। জনতা বাকি দুই খুনি ঈসরাইল ও শাহানকে জনতা আটক করলেও কৌশলে পালিয়ে যায়। এঘটনায় নিহত মিজানুর হোসেন খোকনের বাবা বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামী করে সুনামগঞ্জ থানায় (মামলা নং ২৪(০৭)২২ইং) দাখিল করেন। খুনের ঘটনায় আটক ফয়েজ আহমেদ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি প্রদান করে। কিন্তু ঘটনার প্রায় ২ মাস হয়ে গেলেও, খুনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী এবং মামলার এজাহার নামীয় আসামী ঈসরাইল, শাহান ও অজ্ঞাতনামাদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আসামী পক্ষের লোকজন এলাকায় বলাবলি করছে মামলা দিয়ে তাদের কিছুই করা যাবে না। খুনের ঘটনা দায়েরকৃত মামলা টাকার বিনিময়ে হউক, না হয় অন্যভাবে তা গিলে ফেলবে। তাছাড়া পলাতক খুনিরা দ্রæত গ্রেফতার না হওয়ায় লন্ডন প্রবাসী আনোয়ার ও তার পরিবারের লোকজন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাই খুনের ঘটনার পরিকল্পনাকারি, হুকুমদাতা ওমান প্রবাসী বাদশা, খুনের ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী ঈসরাইল, শাহানসহ অন্যান্যদের দ্রæত গ্রেফতার করে, মামলাটির সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক, দ্রæত বিচারের মাধ্যমে খুনের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদÐ নিশ্চিত করতে সিলেটের ডিআইজি এবং র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন,র‌্যাব-৯ অধিনায়ক বরাবরে আবেদন করেছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *