ডেস্ক রিপোর্ট : আধ্যাত্মিক নগরীর অপরাধ কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রনে বসানো হয়েছিল ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। এর উপকারও পেয়েছিল নগরের বাসিন্দারা। সিসি ক্যামেরা থাকায় অপরাধ কিছুটা কমে এসেছিল, তেমনি ধরা পড়ছিল অপরাধীরাও। তবে এখন প্রায় সবগুলো সিসি ক্যামেরা অকেজো হয়ে গেছে। আর এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে অপরাধী চক্র।
গত ৬ নভেম্বর নগরের বড়বাজার এলাকায় খুন হন বিএনপি নেতা আ.ফ.ম কামাল। এ ঘটনার পর সিসি ক্যামেরা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, কামালকে যেখানে খুন করা হয়েছে, সেখানে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই। তবে ঘটনাস্থলের একটু আগে ক্যামেরা থাকলেও সেটি ছিলো অকেজো। ফলে কিলিং মিশন শেষে খুনিরা কোনদিকে পালিয়ে ছিলো সেটি জানা যায়নি। তবে ঘটনায় একটি ভিডিও ফুটেজ পেয়ে আসামি সনাক্ত করে পুলিশ।
সিসিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে ডিজিটাল সিটি প্রকল্পের আওতায় নগরের তালতলা পয়েন্ট থেকে শুরু করে সুরমা মার্কেট, সিটি পয়েন্ট বন্দরবাজার (ডাকঘরের সামনে), ধোপাদীঘির পার, সোবহানীঘাট হয়ে নাইওরপুল পর্যন্ত এবং সিটি পয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার, কদমতলী এলাকার প্রায় ৬ কিলোমিটার সড়কে ১৩০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়।
এছাড়া সিসিক ও কয়েকজন কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেক ওয়ার্ডের মোড়ে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়। এসব ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে বেশ কিছু অপরাধী। ফলে সিসি ক্যামেরার আওতাভুক্ত এলাকায় কমতে থাকে অপরাধ। উন্নতি হয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও। তবে গত কয়েক মাস ধরে নগরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসহ বিভিন্ন স্থানে বসানো সবগুলো সিসি ক্যামেরা নষ্ট হয়ে আছে। এতে বেড়ে গেছে চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ। আর ক্যামেরা নষ্ট হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীদের সনাক্ত করতে না পারায় অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
নগরীর বন্দরবাজার-চৌহাট্টা সড়কসহ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, সিসি ক্যামেরাগুলোতে জং ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। সিসিকের অবহেলার কারণে দীর্ঘদিন ধরে ক্যামেরাগুলোর সংস্কার করা হচ্ছেনা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এদিকে একসঙ্গে এতগুলো ক্যামেরা অকেজো হওয়ায় নগরবাসীর মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, ক্যামেরা নষ্ট হওয়ায় অপরাধ সংঘটিত করে অপরাধীরা সহজেই পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, দ্রুত ক্যামেরাগুলো মেরামত এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আরো ক্যামেরা স্থাপন না করা গেলে নগরীতে অপরাধপ্রবণতা কমানো কঠিন। পুলিশ বলছে, ক্যামেরাগুলো সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) বসিয়েছে। নষ্ট ক্যামেরা মেরামতের দায়িত্ব তাদের। আর সিসিক বলছে নষ্ট সিসি ক্যামেরাগুলো মেরামতের করে শিগগির সচল করা হবে।
সিলেট সিটি কপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (বৈদ্যুতিক ও পরিবহন) মো: রুহুল আলম বলেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পর মহানগর পুলিশকে মনিটরিং ও রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অনেক এলাকায় ক্যামেরা নষ্ট হয়েছে। এগুলো মেরামতের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সিসিককে অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি। ফান্ড পেলেই নষ্ট ক্যামেরাগুলো মেরামত হবে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সিটিএসবি-মিডিয়া) সুদীপ দাস বলেন, শুনেছি অনেক এলাকায় সিসি ক্যামেরা নষ্ট। যেহেতু সিটি কর্তৃপক্ষ এগুলো দেখভাল করে। তারা মেরামত করলে আমরা এগুলো মনিটরং করবো।
শেয়ার করুন