দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেট-৬ আসনের প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা প্রকাশ্যে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। তারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্ব স্ব প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়ে প্রকাশ্যে এমন বিষোদগার করায় উত্তেজনা ক্রমশ সহিংসতায় রূপ নিতে পারে- এমন মন্তব্য করছেন সাধারণ ভোটাররা।
এদিকে বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ এবারও নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে থাকলেও তাকে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কানাডা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরোয়ার হোসেন (ঈগল)। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে দুই প্রার্থীর অনুসারীরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় ভোটের মাঠ গরম করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেইসঙ্গে দুই প্রার্থীর নেতাকর্মীরা প্রচারে নেমে একে অন্যের সম্পর্কে বিষোদগার করছেন, এমন অভিযোগ সাধারণ ভোটারদের। যে কারণে এই নির্বাচনী এলাকায় দুই প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।
উপজেলার ঢাকাদক্ষিণের ঈগল প্রতীকের প্রার্থী সরোয়ার হোসেনের পক্ষে নির্বাচনী বক্তব্যে বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব (নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে) বলেন, ‘অজু ছাড়া যে নামাজে বা জানাযায় যায়, তাকে ভোট দেওয়া ঠিক নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নাহিদ ভাই এমন কাজ করেন, আমি এর স্বাক্ষী। এইবার আমরা এমন একজনকে সংসদে পাঠাব, যাকে পেতে হলে কোনো খলিফা ধরা লাগবে না।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এম এ ওয়াদুদ এমরুল বলেন, নির্বাচনে গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও দুই ভাগে বিভক্ত। যারা প্রকাশ্যে নুরুল ইসলাম নাহিদের পক্ষে আছে, তারাও ভেতরে ভেতরে সরোয়ার হোসেনের সঙ্গে প্রকাশ্যে যোগাযোগ রাখছে। সুষ্ঠু ভোট হলে সরোয়ার হোসেনই জয়ী হবেন। অপরদিকে নুরুল ইসলাম নাহিদের সমর্থকরাও বলছেন, বর্তমান এমপি বিজয়ী হবেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আকবর আলী ফখর বলেন, দলের তৃণমূলের কর্মীরাই নাহিদ ভাইয়ের শক্তি, না হলে বারবার তিনি (নাহিদ) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেতেন না। তার সময়ে গোলাপগঞ্জ বিয়ানীবাজারে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাসহ সব ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হয়েছে, বিগত দিনে এমন উন্নয়ন কেউ করেনি। বর্তমান সরকারের সব ধরণের উন্নয়নের ছোঁয়া তার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে লেগেছে। কিছু কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের মাধ্যমে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করে ভোটাররা এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবে।
উপজেলার স্থানীয় ঢাকাদক্ষিণ বাজারে শুক্রবার এক নির্বাচনী জনসভায় সরোয়ার হোসেন বলেন, আমি বিগত ১৫ বছর ধরে কানাডার বিলাস জীবন পরিত্যাগ করে এই দুই উপজেলার মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। জনগণও আমাকে এমপি হতে উৎসাহিত করে চলেছে। তাছাড়া নেত্রীর নির্দেশেই আমি ভোটে এসেছি। প্রশাসনও এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষ আছে। এভাবে থাকলে, জয় আমারই হবে। তৃণমূলের কর্মীরা ৭ জানুয়ারি ভোটের মাধ্যমে এর জবাব দেবে।
শেয়ার করুন