অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ শতাধিক পোশাক কারখানা

জাতীয়

নূন্যতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে টানা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলমান শ্রমিক অসন্তোষের জেরে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ার শতাধিক তৈরি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কারখানায় প্রবেশ করে কাজ না করা, কারখানায় ভাঙচুরসহ কয়েকটি কারণ দেখিয়ে শ্রম আইনের ২০০৬-এর ১৩ (১) ধারায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

শনিবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৮ টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া, ছয়তলা, বেরণ ও নরসিংহপুর এলাকায় গিয়ে কারখানাগুলোর সামনে অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ টানানো দেখা গেছে। এসময় অনেক কারখানার মূল ফটকের সামনে কাজে যোগ দিতে আসা শ্রমিকদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকেই কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে বাড়ি ফিরে যান।

সকাল ১১টা পর্যন্ত আশুলিয়ার জামগড়া, ছয়তলা, বেরণ ও নরসিংহপুর এলাকায় কোনো বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি তবে কয়েকটি স্থানে শ্রমিকেরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলেও তারা সংখ্যায় ছিলেন অল্প। এছাড়া যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জামগড়া এলাকার দি রোজ ড্রেসেস লিমিটেড,পাইওনিয়ার ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেড, বেরন এলাকার এনভয় গ্রুপের মানটা অ্যাপারেলস লিমিটেড, স্টারলিংক অ্যাপারেলস লিমিটেড, শারমিন গ্রুপের এ এম ডিজাইন, হলিউড গার্মেন্টস লিমিটেড, নরসিংহপুর এলাকার হামিম গ্রুপের দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেড, বড় রাঙ্গামাটিয়া এলাকার টেক্সটাউন টিমিটেড ও অরনেট নীট গার্মেন্ট ইন্ডাস্টি্রজ লিমিটেড, কাঠগড়া এলাকার এআর জিন্স ও অ্যাপারেলস লিমিটেডসহ অধিকাংশ কারখানায় বন্ধের নোটিশ টানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

নোটিশে বলা হয়, ৯ নভেম্বর সকাল ১০ টায় এবং বিগত কয়েকদিন ধরে বেলা ১১টা ও বিকেল ৩টার সময় মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বহিরাগত পোশাক শ্রমিকদের বেআইনিভাবে কারখানার ভেতর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে কারখানা ভাঙচুর ও কারখানার কাজ বন্ধ রাখাসহ কর্মস্থলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করায় কারখানার উৎপাদন কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এমতাবস্থায় কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ১০ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১৩ (১) ধারা মোতাবেক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হল।

বেরণ এলাকার এএম ডিজাইন কারখানার শ্রমিক সুমি আক্তার বলেন, বৃহস্পতিবার কারখানায় এসে কাজ যোগ দেয়ার পরপরই ছুটি দেয়া হয়। এরপর শ্রমিকরা সবাই বাসায় ফিরে যায়। শুক্রবার সাপ্তাহিক বন্ধ গেছে। সকালে কারখানার সামনে এসে অনির্দিষ্টকালের ছুটির নোটিশ দেখতে পাই। মালিকপক্ষ কী কারণে বন্ধ দিল আমাদের কিছুই জানানো হয় নাই।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে ১৩০টি কারখানা আজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বেশ কিছু কারখানা ছুটিও দেওয়া হয়েছে। সকালে কিছু শ্রমিকেরা জড়ো হওয়ার পাশাপাশি সড়কে অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলেও পারেনি। তাই এখন পর্যন্ত কোনো বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেনি। নাশকতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্যরা মাঠে আছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *