দেশের অবিবাহিত জনসংখ্যার দিক দিয়ে এগিয়ে আছে সিলেট বিভাগ। আর বিবাহের সংখ্যার দিক দিয়ে এগিয়ে আছে রাজশাহী। জনশুমারি ২০২২-এর প্রকাশিত প্রাথমিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আওতায় বিবিএস-এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের মোট জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। যেখানে ৮ কোটি ১৭ লাখ পুরুষ ও ৮ কোটি ৩৩ লাখ নারী ও ১২ হাজার ৬২৯ জন তৃতীয় লিঙ্গ। এবারই প্রথম দেশের পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেড়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সব বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবিবাহিত সিলেটে। যা ৩৭.৭৭ শতাংশ অবিবাহিত, বর্তমানে বিবাহিত ৫৫.৫৯ শতাংশ, বিধবা বা বিপত্নীক ৫.৮১ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত ০.৪৩ শতাংশ এবং দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন ০.৩৯ শতাংশ মানুষ।
আর ৬৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ বিবাহিত নিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রাজশাহী। অবিবাহিতের সংখ্যা ২৪.৩৮ শতাংশ। বিধবা বা বিপত্নীক রয়েছে ৫.৬৬ শতাংশ, তবে তালাকের হারও বেশি রাজশাহীতে, যা ০.৬১ শতাংশ এবং দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন ০.৩৭ শতাংশ মানুষ।
এছাড়া বরিশালে ২৭.২০ শতাংশ অবিবাহিত, বর্তমানে বিবাহিত ৬৬.৬৬ শতাংশ, বিধবা বা বিপত্নীক ৫.৫৪ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত ০.২৯ শতাংশ এবং দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন ০.৩১ শতাংশ।
চট্টগ্রামে ৩২.৫৭ শতাংশ অবিবাহিত, বর্তমানে বিবাহিত ৬১.৬৭ শতাংশ, বিধবা বা বিপত্নীক রয়েছে ৫.১৪ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত ০.৩০ শতাংশ এবং দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন রয়েছে ০.৩২ শতাংশ।
ঢাকায় ২৮.৯৩ শতাংশ অবিবাহিত, বর্তমানে বিবাহিত ৬৫.৬৩ শতাংশ, বিধবা বা বিপত্নীক রয়েছে ৪.৬৬ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত ০.৪০ শতাংশ এবং দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন রয়েছে ০.৩২ শতাংশ।
খুলনায় ২৪.৫২ শতাংশ অবিবাহিত, বর্তমানে বিবাহিত ৬৮.৮৫ শতাংশ, বিধবা বা বিপত্নীক ৫.৬২ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত ০.৫৫ শতাংশ এবং দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন ০.৪৬ শতাংশ।
ময়মনসিংহে ২৭.৭৫ শতাংশ অবিবাহিত, বর্তমানে বিবাহিত ৬৫.৭৪ শতাংশ, বিধবা বা বিপত্নীক ৫.৭৬ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত ০.৪০ শতাংশ এবং দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন ০.৩৫ শতাংশ মানুষ।
রংপুরে ২৫.৭৮ শতাংশ অবিবাহিত, বর্তমানে বিবাহিত ৬৭.৬৫ শতাংশ, বিধবা বা বিপত্নীক ৫.৮৪ শতাংশ, তালাকপ্রাপ্ত ০.৩ শতাংশ এ৮বং দাম্পত্য বিচ্ছিন্ন ০.৩৫ শতাংশ মানুষ।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। প্রাথমিক প্রতিবেদন বিষয়ক উপস্থাপনা করেন প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন।
এর আগে গত ১৫ জুন ভাসমান জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহের মধ্যদিয়ে দেশে শুরু হয় ষষ্ঠ ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’ কার্যক্রম। এবারই প্রথমবারের মতো ডিজিটাল পদ্ধতিতে করা হয় শুমারির কাজ। নিরাপত্তা ও সহজে তথ্য বিনিময়ের স্বার্থে দিনের বেলায় নিয়োজিত কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন।
‘জনশুমারিতে তথ্য দিন, পরিকল্পিত উন্নয়নে অংশ নিন’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রাথমিকভাবে ২১ জুন রাত পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলে।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় ১৯৭৪ সালে প্রথম আদমশুমারি ও গৃহগণনা পরিচালিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দশ বছর পরপর ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১ এবং ২০১১ সালে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়।
শেয়ার করুন