অভিযানের পর দাম কমলো ইলিশের

জাতীয়

ফরিদপুরে ইলিশের বাজারে অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর। তাদের উপস্থিতিতে বাজারে ইলিশের দাম কমে যায় কেজিপ্রতি ২০০ টাকা। এ সময় দুর্গা মৎস্য ভাণ্ডার ও রুপালি ইলিশ পাইকারি ব্যবসায়ীকে ৪০ হাজার করে মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে শহরের হাজী শরীয়তুল্লাহ ইলিশের বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এদিকে ফরিদপুরে বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে ছিল ইলিশের দাম। এই নিয়ে ক্ষোভ ছিল ভোক্তাদের। তাদের অভিযোগ ছিল, সরকার বদল হলেও বাজার ব্যবস্থাপনা এখনো সিন্ডিকেটের বেড়াজালে বন্দী। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছিলেন তারা।

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সোহেল শেখ জানান, কয়েকদিন ধরে বিভিন্নভাবেই আমাদের কাছে অভিযোগ আসছিল ইলিশের সিন্ডিকেটের বিষয় নিয়ে। যে কারণে আমরা বাজার পরিস্থিতি জানার জন্য অভিযান পরিচালনা করেছি। বাজারে নানা অভিযোগ আমাদের দৃষ্টিতে আসে। প্রাথমিকভাবে আমরা ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছি। এছাড়া দুইটি আড়তদারকে (দুর্গা মৎস্য ভাণ্ডার ও রুপালি ইলিশ) ৪০ হাজার করে মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ওই বাজারে মাছ কিনতে আসা রাশেদুল হাসান কাজল জানান, অভিযানের আগে যে মাছটির দাম ১৮শ থেকে ১৯শ চাওয়া হয়েছিল এখন সেটি কমে ১৫শ থেকে ১৬শ টাকায় চলে এসেছে। তিনি আরও জানান, এরকম নজরদারির মাঝে মধ্যেই হওয়া দরকার, তবেই অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত থেকে ভোক্তারা রেহাই পাবে।

এর আগে এই বাজারে বরিশাল, ভোলা বা পটুয়াখালীর ১ কেজি সাইজের ইলিশ ১৫শ’ থেকে ১৭শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। আর কেজির ওপরে গেলে তার দর ১৯শ’ থেকে ২২শ’ টাকায় উঠছে। আর কেজিতে চার-পাঁচটি পাওয়া যায় এমন সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছিল ৮শ’ থেকে ৯শ’ টাকায়। অভিযানের পর ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কমে বিক্রি করা হয় সব ধরণের ইলিশ।

একাধিক ক্রেতা জানায়, ফেসবুক আর পত্রিকায় শুধু মাছের দাম কম দেখি, কিন্তু বাজারে এলে তার উল্টো চিত্র মেলে। তবে আজকে ভোক্তা অধিকারের অভিযানের কারণে বাজারে আসা ক্রেতারা তুলনামূলক কম দামে ইলিশ মাছ কিনতে পেরেছে।

ক্রেতারা ক্ষোভ জানিয়ে আরও বলেন, অভিযানের ফলে কেজিতে ২০০ টাকা বা তার কম-বেশি দাম কমেছে, তবে কেন সবসময় এমনটি হবে না। আমাদের ব্যবসায়ীদেরও নৈতিক অবক্ষয় ঘটেছে। সবকিছুতেই অধিক মুনাফা খোঁজার অভ্যাসটা খুব খারাপ জিনিস

অভিযান পরিচালনার সময় খুচরা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে জানান, ইলিশ মাছের আড়তদাররা ৪২ থেকে ৪৩ কেজিতে মণ হিসেবে কিনলেও খুচরা ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে ৪০ কেজিতে মণ। তাদের দাবি, দেশের কোনো মাছ বাজারে এই ব্যবস্থা নাই। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে আড়তদার মাছ দেয়া বন্ধ করে দেয়।

রমজান শেখ ও মো. আলমগীর হোসেন নামের দুই খুচরা মাছ ব্যবসায়ী জানান, অন্যান্য জেলার মতো এখানেও যদি মণ প্রতি দুই থেকে তিন কেজি ধরে তাদের কাছে বিক্রি করে, তাহলে কেনা দামে বিক্রয় করলেও তাদের লোকসান হয় না।

ফরিদপুরের ইলিশের বাজারে এই অভিযানে ভোক্তা অধিকারকে সহযোগিতা করেন আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *