অভিযোগের পাহাড় মাথায় নিয়ে বদলি হলেন মাজহারুল

সিলেট

নানা অনিয়মের অভিযোগে অবশেষে সিলেট থেকে সরিয়ে নেওয়া হলো বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক এ কে এম মাজহারুল ইসলামকে। তাকে খুলনা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে বদলি করা হয়েছে।

তবে অসমর্থিত সূত্রমতে জানা গেছে, নোয়াখালী পাসপোর্ট অফিসের উপ পরিচালক মহের উদ্দিন শেখ তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন।

রোববার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মাসব্য ও অর্থ)উম্মে সালমা তানজিয়া স্বাক্ষরিত পরিপত্রে তাকে বদলি করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক এ কে এম মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের হয়রানি, ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমেও বেশি কিছু তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হয়। এমন অভিযোগে ৮ সেপ্টেম্বর দুদক সিলেটের সমন্বিত কার্যালয় থেকে অভিযানও পরিচালিত হয়। এছাড়া গত বছরের ২৮ অক্টোবর দুদকের গণশুনানিতে পাসপোর্ট অফিসের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগীরা।

সম্প্রতি সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে পাসপোর্ট করতে যাওয়া এক নারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে মাজহারের বিরুদ্ধে মামলা করেন সেই ভুক্তভোগী নারী। গত ১৬ নভেম্বর এসএমপির মোগলাবাজার থানায় সাধারণ করেন তিনি।

পরদিন ১৭ নভেম্বর জিডির ঘটনায় বর্ণিত অপরাধ তদন্ত চেয়ে আদালতে আবেদন করে পুলিশ। এরপর রোববার (২০ নভেম্বর) ওই সাধারণ ডায়েরি তদন্তে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মেট্টোপলিটন ২য় আদালতের বিচারক।

এছাড়া গত ২৭ সেপ্টেম্বর সিলেট বিভাগীয় প্রশাসনের আয়োজন সংশ্লিষ্ট দফতরের সম্মেলন কক্ষে পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘব এবং সেবা সহজীকরণে অংশীজনদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় হয়রানির নানা অভিযোগ তুলে ধরা হয়।

ওইদিন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, পাটপোর্ট অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানে দিনে অন্তত ১৬ লাখ টাকার ঘুষ দুর্নীতি হয়। এ কে এম মাজহারুল ইসলাম তিনবার সিলেট পাসপোর্ট অফিসে আসেন।

১৯৯১-১৯৯২ সালে নগরের শেখঘাটস্থ সিলেট পাসপোর্ট অফিসে প্রথম যোগদান করেন। পরে তিনি অন্যত্র বদলি হন। ২০১১ সালে নগরীর উপশহরে এমআরপি পাসপোর্ট চালু হলে তিনি আবার সিলেট আসেন। এ সময় তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তিন মাসের মধ্যে তাকে সিলেট থেকে বদলি করা হয়।

২০১৭ সালে আবার সিলেটে বদলি হয়ে আসেন তিনি। এবারও দুনীর্তির জন্য বেশিদিন টিকতে পারেননি। সবশেষ তিনি ২০১৯ সালের সেপটেম্বর মাসে চতুর্থ বারের মতো সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে পরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েও নানা অনিয়মের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *