জেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেট ও মৌলভীবাজার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত দুই চেয়ারম্যানপ্রার্থী। তারা হলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান এবং মৌলভীবাজারে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক, সাবেক প্রশাসক মিসবাহুর রহমান।
তাদের মধ্যে অর্থ ও শিক্ষায় এগিয়ে রয়েছেন অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলবি। আর নগদ অর্থ সম্পদের দিকেও তিনি এগিয়ে রয়েছেন মৌলভীবাজারের চেয়ারম্যানের চেয়ে। তাঁর স্থাবর ও অস্থাবরসহ সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ১১ লাখ ৪ হাজার ৪১৩ টাকা।
আর মৌলভীবাজার জেলা পরিষদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাওয়া চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি। তবে অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের চেয়ে সম্পদে এগিয়ে আছেন মিসবাহুর। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে রয়েছে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৫৫ হাজার ১৮৬ টাকার। তবে জায়গা জমির দিক থেকে মিসবাহুরের দ্বারেকাছেও নেই সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন। মিসবাহুর হলফনামায় পত্রিকভাবে প্রাপ্ত সম্পদের পরিমাণ দেখালেও এর মূল্য উল্লেখ করেননি।
নির্বাচন কমিশনে দুই প্রার্থীর দাখিলকৃত হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। অতীতে জরুরী বিধিমালা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে হওয়া দুই মামলা উচ্চ আদালতের আদেশে প্রত্যাহার হয়েছে। তার বাৎসরিক আয় বাড়ি/এপার্টমেন্ট/দোকান ভাড়া থেকে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা। এই খাতে নির্ভরশীলদেরও আয় সমপরিমাণ। অংশীদারী ব্যবসা থেকে ৮ লাখ ৯ হাজার ৭৫০ টাকা এবং এখাতে নির্ভরশীলদের আয় ৬ লাখ ১৭ হাজার ১৩৮ টাকা। আইনপেশা থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ১২ লাখ ৬২ হাজার টাকা।
অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজনামে নগদ আছে ৭ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫৩ টাকা। স্ত্রীর নামে ১৩ লাখ ৫৫ হাজার ৪১০ টাকা।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বন্ড, ঋণপত্রে নিজ নামে ১ লাখ ৩ হাজার ১৭০ টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ইনস্যুরেন্স কোম্পানীতে আছে ২৩ লাখ ১২ হাজার ৪৫৪ টাকা এবং স্ত্রীর নামে আছে ২১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৩৮ টাকা। রয়েছে ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ২টি কার, স্বর্ণালঙ্কার বিবাহ সূত্রে পাওয়া, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রি দেখিয়েছেন ২৫ হাজার টাকা এবং আসবাবপত্র ২৫ হাজার টাকার। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে অংশীদারী ব্যবসায় মূলধন ও অন্যান্য খাতে নিজ নামে ৬০ লাখ ২৯ হাজার ৯০০ টাকা এবং স্ত্রীর নামে আছে ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার ৮৪৭ টাকা।
স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ৬ শতক অকৃষি জমি। যার মূল্য দেখিয়েছেন ৬১ লাখ টাকা। ৬ তলা আবাসিক ভবনের অর্ধেকের মালিক তিনি। যার মূল্য ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা। সমপরিমাণ টাকার সম্পদের মালিক তার সহধর্মিনী। তবে ব্যাংকে কোনো দায়-দেনা নেই।
এদিকে, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদে বিনাভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস। পেশায় ইটভাটার মালিক ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যমুনা এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ইট, বালু ও পাথর সরবরাহকারী। ব্যবসা থেকে তাঁর বছরে আয় ১২ লাখ ২৫ হাজার ১০৫ টাকা, ব্যাংকে আমানত আছে ৮ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮১ টাকা, সম্মানী বাবদ পান ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪০০ টাকা।
অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন নগদ ১০ লাখ টাকা, নিজ নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকা ১০ লাখ। ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা দামের হোন্ডা সিআরভি গাড়ি। নিজ নামে স্বর্ণালঙ্কার ৯০ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর নামে আছে ২০ ভরি স্বর্ণ, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার, আসবাবপত্র রয়েছে নিজ নামে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে ২ লাখ টাকার।
স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে পৈত্রিক সূত্রে কৃষি জমি ২ দশমিক ৩৭২৩৯ একর, ২.৯৯ একর। ২৯ হাজার টাকা পূর্বের ক্রয়মূল্যের অকৃষি রয়েছে ১দশমিক ৩২১০২ একর। রয়েছে দ্বিতল আবাসিক ভবন। মায়ের কাছ থেকে প্রাপ্ত বাড়ির ২২ দশমিক ৬৮ ডিসিমেল। দায়দেনা ব্যাংকি না থাকলেও আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে এনেছেন ৯৫ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে করাতকল লাইনেন্সের কাছে বন আইনে মামলা হয়। গত বছর এই মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি।
শেয়ার করুন