অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের চুক্তি

জাতীয়

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের আগে ইউরোপের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ও গোলাবারুদ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হাইনমেটালের সঙ্গে তিন বছরের স্পনসরশিপ চুক্তি করেছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।

জার্মান ক্লাবটির লাইসেন্স করা পণ্যের ওপর হাইনমেটালের লোগো থাকবে। ডর্টমুন্ডের স্টেডিয়াম সিগন্যাল ইদুনা পার্কের বিজ্ঞাপনী বোর্ড ও ক্লাবটির সংবাদ সম্মেলনেও এ প্রতিষ্ঠানের লোগো দেখা যাবে। তবে খেলোয়াড়দের জার্সিতে হাইনমেটালের লোগো দেখা যাবে না। এই প্রথম বুন্দেসলিগার কোনো ক্লাব জার্মানির প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্পনসরশিপ চুক্তি করল।

গত বুধবার চুক্তির পর ডর্টমুন্ডের বিবৃতিতে বলা হয়, এর মাধ্যমে হাইনমেটাল ‘ক্লাবের মাঠ এবং স্টেডিয়ামে ইভেন্ট আয়োজন, বিপণন স্বত্ব ও বিজ্ঞাপনের জায়গা পাবে।’

হাইনমেটালের সদর দপ্তর জার্মানির ডুসেলডর্ফে। ডর্টমুন্ড থেকে ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর। অস্ত্রের পাশাপাশি যুদ্ধের বিভিন্ন রকম সাঁজোয়া যানবাহন এবং ড্রোন তৈরি করে হাইনমেটাল।

ডর্টমুন্ডের চেয়ারম্যান হান্স-জোয়াকিম ওয়াটৎকজ বলেছেন, ‘নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা আমাদের গণতন্ত্রের দুই স্তম্ভ। বিশেষ করে এখন, যখন আমরা দেখি প্রতিদিন ইউরোপে কীভাবে স্বাধীনতা রক্ষা করতে হয়।’

হাইনমেটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরমিন পেপারগার বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিভঙ্গি, উচ্চাশা ও শিকড় ডর্টমুন্ডের মতোই।

হাইনমেটালের সঙ্গে স্পনসর চুক্তি নিয়ে ডর্টমুন্ডের আলোচনার সময় নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছিল ক্লাবটির অফিশিয়াল সমর্থকদের দল। হাইনমেটালের সঙ্গে যেকোনো প্রকারের চুক্তির বিপক্ষে অবস্থান ছিল সমর্থকদের।

জার্মানির শান্তিকামী সংগঠন দ্য জার্মান পিস সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাইকেল শুলজ ফন গ্লাসের ডর্টমুন্ডের ভক্ত। তিনি এই চুক্তি বাতিলের দাবি তুলে বলেছেন, ‘খুব মর্মাহত হয়েছি। একটি অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিবি (ডর্টমুন্ড) অংশীদারত্বে যাবে সেটা কখনো প্রত্যাশা করিনি।’

ডর্টমুন্ডের একজন ভক্ত ও শান্তিকামী মানুষ হিসেবে তিনি এই চুক্তিতে বিক্ষুব্ধ হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর এবং অর্থমন্ত্রী রবার্ট হাবেক এই চুক্তিকে ‘অস্বাভাবিক’ বলেছেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে হাইনমেটাল জার্মানির উত্তরাঞ্চলে নতুন একটি প্ল্যান্ট স্থাপন করছে। সেখানে তারা বছরে প্রায় ২ লাখ সাঁজোয়া যানের গোলা বানাবে। গত বছর ৪২ কোটি ইউরো রাজস্ব আয় করে ডর্টমুন্ড—জার্মানিতে যা বায়ার্ন মিউনিখের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে গত বছর রাজস্ব আয়ে ১২তম অবস্থানে ছিল ডর্টমুন্ড।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে আজ রাতে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে ডর্টমুন্ড।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *