নাহিম মিয়া
জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার উপর হামলাকারী স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের গ্রেফতার ও তাদের অপতৎপরতা বন্ধে বৈষম্যে বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে আজ বৃহস্পতিবার ১২ জুন বেলা ১২টায় টুকের বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বুধবার দিবাগত রাতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচার করা হয়।
এরপরই আড়ালে থাকা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পালটা কর্মসূচী দেয়। গভীর রাতে উপজেলার টুকের বাজারের একটি অজ্ঞাত স্থান থেকে আওয়ামী লীগের পক্ষে একটি মিছিল বের হয়। ২১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুমুল ভাইরাল হয়।
মিছিলে শেখ হাসিনার পক্ষে স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলের পরপরই যেন ছাত্র আন্দোলন আরও জ্বলে উঠে। সকাল ১১টা থেকেই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছাত্ররা টুকেরবাজারে সমবেত হতে থাকে। বেলা ১২টায় উপজেলার টুকের বাজার পয়েন্ট অবস্থান নেয় ছাত্ররা। এ সময় ছাত্ররা দাবী করেন, গত বছরের আগস্টে কোম্পানীগঞ্জের ছাত্রদের উপর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা হামলা করেন। গুলি বর্ষণ করেন। বোমা নিক্ষেপ করেন। ছাত্ররা এখনো সুস্থ্য হয়ে উঠেনি। অথচ নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখনো তাদের কর্মসূচী চালিয়ে আসছে। ছাত্র নেতা মুফতি জাকির হোসেন দাবী করেন, ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে টুকের বাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে মিছিল মিটিং করে যাচ্ছে। অথচ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না।
ছাত্র নেতা শাকিল ইসলাম বলেন, ৭২ ঘন্টার মধ্যে যদি কোম্পানীগঞ্জের আওয়ামী ডেভিলদের গ্রেফতার না করা হয় তবে কোম্পানীগঞ্জ থানা ঘেরাও করা হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব সিদ্দিক আবু আলা বলেন, টুকের বাজারে আওয়ামী লীগ সংগঠিত হচ্ছে। রাতে নিষিদ্ধ সংগঠন মিছিল করছে। অথচ পুলিশ তাদের ধরছেনা
বিক্ষোভের খবর পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওজায়ের আল আদনান জুবায়ের ছাত্রদের সমাবেশে ছুটে আসেন। এ সময় তিনি বলেন, আমি মনে করি দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার করতে হবে। গতকাল একজন ডেভিলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ আগস্ট সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেন। এ ঘটনায় ৩৩জনের নাম উল্লেখ করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা হলেও মূল আসামীদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ। আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেনা বলে জানান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী ও মামলার বাদী ইউসুফ আমিন জনি। তিনি আরও বলেন, মূল আসামীদের গ্রেফতার না করে অচেনা-অজানা ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে পুলিশ মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছে। ইউসুফ আমিন জনি আরও বলেন, শুধুমাত্র মামলার বাদী হওয়ার কারনে আওয়ামী ডেভিল ইয়াকুব আলীর আত্মীয়স্বজন আমিসহ আমার আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে তিনটা মিথ্যা মামলা করেছে।
শেয়ার করুন