আমদানির সাড়ে তিনগুণ দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে আলু

অর্থনীতি ও বানিজ্য

মৌসুমের শেষের দিকে বাজারে আলুর সরবরাহ ঠিক থাকলেও প্রায় সাড়ে তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। ভারত থেকে ২১ টাকা ৬০ পয়সা কেজি দরে আলু আমদানি করা হচ্ছে। পরিবহন খরচসহ অন্যান্য খরচ ও লাভসহ পণ্যটি পাইকারি সর্বোচ্চ ২৮ টাকা ও খুচরা সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা দরে বিক্রির কথা। কিন্তু বাজারে সেই আলু ৭৫ টাকা কেজি দরে কিনছেন ক্রেতারা।

আমদানির পাশাপাশি বাজারে আসতে শুরু করেছে কৃষকের নতুন আলু। অন্যদিকে আলু আমদানিতে শুল্কহার ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবুও কমিশন বাণিজ্যে সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে হু হু করে আলুর দাম বাড়ছে।

জানা গেছে, এই সিন্ডিকেটের গাছ আমদানিকারকরা ও মুল শিকড় শ্যামবাজারের আড়তদার সিন্ডিকেট। আগে থেকেই অবৈধভাবে মুনাফা লাভের গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে তারা। আমদানিকারকরা কমিশনের মাধ্যমে আড়তদারদের দিয়ে আলু বিক্রি করান। আমদানিকারকরা সর্বোচ্চ ২১ টাকা ৬০ পয়সার আলুকে তারা দুই পর্যায়ে সিন্ডিকেট করে আড়তদারদের ৫৫-৬০ টাকা বিক্রির নির্দেশ দিয়েছে। আড়তদাররা এই দামে আলু বিক্রি করছেন। ফলে এই আড়তি দামের আলু খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে দেশের হিমাগারগুলোতে চলছে আরেক সিন্ডিকেট। কোল্ড স্টোরেজে যারা আলু সংরক্ষণ করছেন, তারা এখন দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। যে কারণে আলুর দাম বেশি বেড়েছে। এখানে গুটিকয়েক ব্যবসায়ী আছেন, যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। পুরাতন আলু প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরের আলু হিমাগার পর্যায় থেকে দাম বাড়িয়ে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। সেই আলু পাইকারি বাজার হয়ে খুচরা পর্যায়ে ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা এক মাস আগেও ৫৫-৬০ টাকা ছিল।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, শীত আসার আগে প্রতি বছর ২৫ টাকার নিচে নেমে আসে আলু। এ সময় এক কেজি আলু ৭৫ টাকা মানে, এটি একটি অরাজকতা। এগুলো কী দেখার কেউ নেই?

এ বিষয়ে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘কোনো সরকারই বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল সিন্ডিকেট ভাঙবে। কিন্তু সেটাও দেখা যাচ্ছে না। সরকার গঠনের পর চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় হঠাৎ করে কিছু পণ্যের দাম কমেছিল। তবে কয়েকদিন পরই চাঁদাবাজির হাতবদল হওয়ায় ফের পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে পুরোনো সেই সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বাড়িয়েছে পণ্যের দাম। এতে নাজেহাল ভোক্তা।’

তিনি বলেন, পণ্যের দাম কে বাড়ায়, ‘কারা সিন্ডিকেট করে সরকারের কাছে সব তথ্য আছে। ব্যবস্থা নিতে পারলে দাম কমবে। তবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ভর করেছে সব গাফিলতি। গলাকাটা দাম আর কত সইবে ভোক্তা।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *