প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন: দলের একজন কাউন্সিলরও যদি চান তাহলে আমি দায়িত্ব ছেড়ে দেব। আমার অবসরের সময় এসেছে। আমি চাই দলে নতুন নেতৃত্ব আসুক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা। সেই কাজটি করতে পেরেছি। জাতির পিতা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা পেয়েছিল। এখন বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ২০০৮ থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় আছে।’
‘এখন আমি বিদায় নিতে প্রস্তুত। আমার বিদায় নেওয়ার সময় চলে এসেছে’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ সব সভায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে, যা বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান যেমন আরও সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করবে বলে আমি আশাবাদী। সামগ্রিক বিবেচনায় এবারের অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সফল বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থানের সময় প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম এনার্জি-এনভায়রনমেন্ট নিউজ, সিবিএস, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং দ্য পলিটিকো আমার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। এসব সাক্ষাৎকারে জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক সংকট এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়গুলো উঠে আসে।
জাতিসংঘ অধিবেশনের প্রসঙ্গ তুলে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের জন্য আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং অর্জিত সাফল্যের কথা তুলে ধরে অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু কার্যক্রমের প্রসারের জন্য আমি বিশ্ব নেতাদেরকে আহ্বান জানাই। প্রযুক্তির ব্যবহারে সবার ন্যায্য ও সমান সুযোগ সৃষ্টি এবং ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তিগত বিভাজন দূর করার ওপর গুরুত্বারোপ করি।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বশান্তি অর্জনের লক্ষ্যে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণ কার্যক্রমে বাংলাদেশের অঙ্গীকার এবং অংশগ্রহণের বিষয়টি তুলে ধরেছি। মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করি।
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ দিনের সফর শেষ করে ৪ অক্টোবর দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, ১৫ সেপ্টেম্বর তিনি যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে লন্ডনে যান এবং সেখানে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এবং রাজা তৃতীয় চার্লস আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগদান করেন।
তিনি ১৯ সেপ্টেম্বর, নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে লন্ডন ত্যাগ করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে, তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং এর পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
শেয়ার করুন