নির্বাচন ঘিরে অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি জাতির পিতার কন্যা, কারও কাছে মাথা নত করি না, কারও কাছে মাথা নত করব না।
তিনি বলেন, নির্বাচন ঘিরে অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আছে। যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দেয়নি, তাদের চক্রান্ত থেমে যায়নি। আর যেহেতু তারা জানে কারও কাছে আমরা মাথা নত করি না, সেজন্য চক্রান্ত আরও বেশি।
মঙ্গলবার বিকালে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের মাঠে নির্বাচনি জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে, দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে ফরিদপুর সার্কিট হাউসে পৌঁছান আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সফরসঙ্গী হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতারা ছিলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম হক।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থেকে দেশের জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলে ছিল। একুশ বছর পর সরকার গঠন করার পর দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনে আওয়ামী লীগ।
‘আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম পদ্মা সেতু করব, সেটা করেছি। বাঙালি কারো কাছে মাথা নত করব না।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দুর্নীতি করতে আসেনি, নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে আসেনি, এসেছে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে। বিশ্বব্যাংক যখন দুর্নীতির অভিযোগ দিয়েছিল, তখন আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেনি। আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম পদ্মা সেতু করব, করেছি। বাঙালি কারো কাছে মাথা নত করবে না।
‘একমাত্র নৌকা মার্কায় ভোট দিলেই আমি ক্ষমতায় আসতে পারব, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব। এ মাটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাটি, এই মাটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি, নৌকার ঘাঁটি।’
বাংলাদেশকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পরাজিত শক্তি এখনো ষড়যন্ত্র করছে। কারণ তারা জানে আমরা কারো কাছে মাথা নত করি না।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, একবার ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছিল খালেদা জিয়া। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও টেনেটুনে কোনোরকম মেট্রিক পরীক্ষা দেয়। এই পরীক্ষায় পাস করেছিল মাত্র দুইটা সাবজেক্টে। একটা হলো উর্দু আরেকটা অংক। অংক ভালো করে শিখেছিল কারণ টাকা গুনতে হয়। ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি করে মেলা টাকা বানানো সহজ। আর উর্দু, কারণ তার পেয়ারের পাকিস্তান ছিল। সেজন্য তিনি মনে করতেন তিনি পাস করতে পারেন নাই, বাংলাদেশের ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত হবে কেন!
সরকারপ্রধান বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষা হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এই শিক্ষার পেছনে বর্তমান সরকার অনেক টাকা খরচ করে যাচ্ছে। জাতির পিতা বলেছিলেন শিক্ষার পেছনে যেটা খরচ হয়, সেটা খরচ নয় বিনিয়োগ। আমাদের লক্ষ্যই দেশের মানুষের উন্নয়ন করা, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোনো মানুষ ক্ষুধার্ত থাকবে না। দারিদ্র থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না সেই লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্যেকটা মানুষের জীবন উন্নত করারই আমাদের লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বয়স্ক ভাতা আওয়ামী লীগ প্রথম চালু করে। একুশ বছর পর সরকার গঠন করার পর দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরিয়ে আনে আওয়ামী লীগ। আর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসেই জনজীবন বিপর্যস্ত করে তোলে। দেশের তৃণমূল, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ তরুণ প্রজন্মকে আত্মনির্ভরশীল করতে সরকার কাজ করছে।
শেয়ার করুন