স্টাফ রিপোর্টার:
ফুটবলে ব্রাজিল–আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ বরাবরই ঐতিহাসিক। এই ম্যাচগুলোতে প্রায়শই নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। তবে এবারের দ্বৈরথটি মাঠে গড়ানোর আগেই ঐতিহাসিক হয়ে গেছে। কারণ, দুদলের ঘোষিত চূড়ান্ত স্কোয়াডে নেই লিওনেল মেসি ও নেইমার। চোটের কারণে এই দুই তারকা খেলতে পারছেন না, যা দীর্ঘ দুই দশকের মধ্যে প্রথমবার ঘটতে যাচ্ছে।
ব্রাজিল–আর্জেন্টিনা ম্যাচে মেসি ও নেইমারের অনুপস্থিতি একেবারেই বিরল ঘটনা। সর্বশেষ এমন ঘটনা ঘটেছিল ২০০৫ সালের ২৯ জুন, ফিফা কনফেডারেশনস কাপ ফাইনালে। সেদিন তেভেজ-রিকুয়েলমেদের আর্জেন্টিনাকে ৪–১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল। এরপর প্রায় ২০ বছর ধরে দুই দলের প্রতিটি দ্বৈরথে অন্তত মেসি বা নেইমার, কিংবা দুজনকেই মাঠে দেখা গেছে।
মেসি ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট হাঙ্গেরির বিপক্ষে আর্জেন্টিনার জার্সিতে অভিষেক করেন এবং ২০০৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর ব্রাজিলের বিপক্ষে প্রথমবার খেলেন। অন্যদিকে, নেইমার ২০১০ সালের ১০ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ব্রাজিলের জার্সিতে অভিষেক করেন এবং একই বছরের ১৭ নভেম্বর প্রথমবার আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামেন।
মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে ১৬ বার ব্রাজিলের মুখোমুখি হয়ে ৮ জয়, ২ হার ও ৬ ড্র করেছেন। তবে ছয়টি ম্যাচে তিনি খেলতে পারেননি, যেখানে নেইমার ব্রাজিল দলে ছিলেন। এসব ম্যাচে আর্জেন্টিনা ১ জয়, ১ ড্র ও ৩ হারের মুখ দেখেছে।নেইমার ব্রাজিলের হয়ে ১১ ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৫ জয়, ২ ড্র ও ৪ হার পেয়েছেন। তবে তিনি পাঁচটি ম্যাচে খেলতে পারেননি, যেখানে মেসি খেলেছেন। ওই ম্যাচগুলোতে ব্রাজিল কেবল একবার জিতেছে, দুটি ড্র ও দুটি হেরেছে।
চলতি মাসে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দুটি ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা। আগামী শনিবার উরুগুয়ের বিপক্ষে মন্টেভিডিওতে এবং ২৬ মার্চ বুয়েনস এইরেসে ব্রাজিলের বিপক্ষে মাঠে নামবে তারা। প্রাথমিক স্কোয়াডে মেসির নাম থাকলেও চোটের কারণে চূড়ান্ত দলে তিনি জায়গা পাননি।
ব্রাজিলেরও দুটি ম্যাচ রয়েছে। যথাক্রমে ২১ মার্চ কলম্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাসিলিয়ায় এবং ২৬ মার্চ আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। শুরুতে নেইমারকে স্কোয়াডে রাখা হলেও চোটের কারণে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বে ১২ ম্যাচ শেষে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে আর্জেন্টিনা। ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে উরুগুয়ে এবং ১৮ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে ব্রাজিল। শীর্ষ ছয়টি দল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলবে, আর সপ্তম দলকে প্লে-অফ খেলতে হবে।
মেসি ও নেইমারবিহীন এই সুপার ক্লাসিকো কতটা রোমাঞ্চকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে দুই তারকা না থাকলেও এই ঐতিহাসিক দ্বৈরথের উত্তাপ কমবে না বলেই প্রত্যাশা।
শেয়ার করুন