‘আল কায়েদায় অনুপ্রাণিত’ হয়ে ঘরছাড়া ছয় যুবক গ্রেপ্তার

জাতীয়

উগ্রবাদের দীক্ষা নিয়ে ঘর ছাড়া ছয় যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। গ্রেপ্তারের পর পুলিশের এ ইউনিটের তরফ থেকে বলা হয়েছে, জঙ্গিগোষ্ঠী ‘আল কায়েদার মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে’ কক্সবাজারের টেকনাফে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছিল তারা।

গতকাল রোববার দিবাগত রাতে তাদের কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে সোমবার (২ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য জানান এ ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।

গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন- আব্দুর রব (২৮), মো. সাকিব (২৩), শামীম হোসেন (১৮), নাদিম শেখ (১৯), মো. আবছার (২০) ও সাইদ উদ্দিন (১৮)।  রোববার রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার আব্দুর রব কওমী মাদ্রাসায় পড়তেন, তিনি কোরআনে হাফেজ। ২০১৯ সালের জুন মাসে তিনি সৌদি আরবে যান। সেখানে অবস্থানকালে অনলাইনে বিভিন্ন জিহাদি পোস্ট ও ভিডিও দেখে উগ্রবাদে অনুপ্রাণিত হন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোহিঙ্গা নির্যাতনের একটি ভিডিওতে মন্তব্যের সূত্র ধরে সাঈদের সাথে তার পরিচয় হয়। একইভাবে শামীম, সাকিব, নাদিমসহ আরও কয়েকজনের সাথে পরিচিত হন তারা।

আসাদুজ্জামান বলেন, আব্দুর রব সমন্বয়ক হিসেবে সবাইকে অনলাইনে একত্রিত করে শরিয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন, জিহাদ, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেন। পরে বিদেশে অবস্থানরত এক বাংলাদেশির সাথে তাদের অনলাইনে পরিচয় হয়। ওই ব্যক্তি সবাইকে হিজরত করে জিহাদের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।

পরবর্তীতে সেই ভ্যক্তি লিবিয়ায় অবস্থানরত আরও একজন বাংলাদেশি এবং টেকনাফের স্থানীয় একজনের সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দেয়। সম্মিলিত আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, যারা হিজরতে রাজি, তারা প্রথমে টেকনাফে গিয়ে তাদের স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে ট্রেনিং নেবেন। পরে তারা বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য জিহাদ করবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সবাইকে যার যার মত করে টেকনাফে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় দল থেকে। ১৬ নভেম্বর সাকিব ও নাদিম টেকনাফ যান এবং স্থানীয় সহযোগী ও গ্রেপ্তার আবছার তাদেরকে টেকনাফে ভাড়া বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন।

আব্দুর রব ছুটি না পাওয়ায় সময়মত আসতে না পারায় টেকনাফে তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন অন্যরা। গত ২২ নভেম্বর আব্দুর রব সৌদি আরব থেকে দেশে এলে শামীম তাকে বিমানবন্দর থেকে একটি ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। দুদিন পর তারা দুজন সাকিবদের সাথে মিলিত হন এবং অন্য সহযোগীদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এ অবস্থায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ছয়জনের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *