আশা জাগিয়েও শেষ রক্ষা হলো না বাংলাদেশের

খেলাধুলা

আশা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত জিততে পারল না বাংলাদেশ। কিউইদের লক্ষ্য মাত্র ১৩৭। এই ছোট লক্ষ্যটাকে কঠিন বানিয়ে দিয়েছিলেন স্পিনাররা। একটা সময় মনে হয়েছে জিতেই যাবে বাংলাদেশ। তখন মাত্র ৬৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুকছে নিউজিল্যান্ড।

সেখান থেকে মিচেল স্যান্টনারের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে জুটি বেঁধে কিউইদের জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয় প্রথম ইনিংসের নায়ক ফিলিপস। ফিলিপস ৪০ ও মিচেল স্যান্টনার ৩৫ রান করেন। তাদের অপরাজিত ৭০ রানের জুটি ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে নিউজিল্যান্ডের। এতে ম্যাচে জয়ের পাশাপাশি টেস্ট সিরিজ ১-১ এ ড্র করে কিউইরা।

এই ম্যাচটি জিতলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয় নিশ্চিত হতো বাংলাদেশের। ব্যাটারদের কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে সেই আশা গুড়েবালি হল স্বাগতিকদের।

ফিলিপস আর স্যান্টনারের ৭০ রানের জুটি আর ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। অথচ ৬৯ রানেই ৫ উইকেট ছিল না নিউজিল্যান্ডের। শেষ পর্যন্ত ৪০ রানে ফিলিপস আর ৩৫ রানে অপরাজিত থেকে বিজয়ীর বেশে মাঠ ছেড়েছে তারা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ঘরের মাঠে নিজের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মেরেছেন। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। পিচে বল প্রচুর টার্ন করলেও সেভাবে সর্তক হয়ে খেলেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ফলে মাত্র ১৪৪ রানে গুটিয়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময়ী ইনিংস।

অল্প পুঁজি নিয়ে লড়াইয়ে ছিল বাংলাদেশ। ৩৩ রানেই ৩ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার ডেভন কনওয়ে, কেন উইলিয়ামসন আর হেনরি নিকোলসকে ফিরিয়েছিল বাংলাদেশ। এর পর দলীয় স্কোর ৫১ রানে নিতে আরও দুটি উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড।

বোলিং সহায়ক পিচ হওয়ার কারণে দ্রুতই নিজেদের দায়িত্বের পালনে উঠেপড়ে লেগেছেন টাইগার বোলাররা। শুরুটা করেছিলেন পেসার শরিফুল ইসলাম। লাঞ্চ বিরতি থেকে আসার পরই কিউই ওপেনার ডেভন কনওয়েকে এলবিডব্লিউ করেছেন টাইগার পেসার। ১৫ বলে ২ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন এই কিউই ব্যাটার।

কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে অস্বস্তিতে ছিল টাইগাররা। তবে তাইজুলের ঘূর্ণি স্বস্তি এনে দিয়েছে বাংলাদেশকে। বাঁহাতি এই স্পিনারকে সামনে এসে পুল করতে গিয়ে বলটি মিস করেন উইলিয়ামসন। মুহূর্তেই বলটি হাতে তালুবন্দি করে স্টাম্প ভেঙে দেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান। দুর্দান্ত স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ২৪ বলে ১১ রান করে ফেরত যান উইলিয়ামসন।

এর পর ব্যাট করতে আসা নিকোলসকেও পিচে থাকতে দেননি মিরাজ। এলবিডব্লিউ করে ৩ রান করা কিউই ব্যাটারকে ফেরান এই ডানহাতি স্পিনার। ল্যাথামকে (৬০ বলে ২৬) নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ বানান মিরাজ। তাইজুলের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন ব্লান্ডেল।

কিউইদের জয়ে অবদান রাখা ব্যাটার ড্যারিল মিচেলও মিরাজের শিকার হন। এই ইনিংসে ৩৬ বলে ১৯ রান করে শান্তর হাতে ধরা পড়েন ডানহাতি কিউই ব্যাটার।

এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসে জাকির হাসানের ফিফটির সুবাদে কোনো মতে ১৪৪ রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। অ্যাজাজ প্যাটেল আর মিচেল স্যান্টনারের ঘূর্ণিতে একের পর এক উইকেট হারিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। কিন্তু অপরপ্রান্ত ধরে রেখেছেন ওপেনিংয়ে নামা জাকির হাসান। অবশেষে চাপের মুখে থেকেও টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি হাঁকিয়েছেন এই টাইগার ব্যাটার।

নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম ও নাঈম হাসান, তাইজুলের সঙ্গে ছোট ছোট জুটি করে ৮৬ বলে ৫৯ রান করেন জাকির।

দিনের শুরুটা ভালো করলেও অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। এরপর তো খেই হারিয়ে বসেন ব্যাটাররা। অ্যাজাজের এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে মুমিনুল (১৯ বলে ১০) ফেরার পর একে একে উইকেট বিলিয়ে দেন মুশফিকুর রহিম, শাহাদাত হোসেন দিপু ও মেহেদী হাসান মিরাজ, নুরুল হাসান সোহান, নাঈম হাসান ও শরিফুল ইসলাম।

ব্যাট করতে নেমে পিচে সেটই হতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। খেলেন মাত্র ১২ বল। ৯ রান তুলে স্যান্টনারের ঘূর্ণিতে স্লিপে থাকা ড্যারিল মিচেলের হাতে ধরা পড়েন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। এরপর স্যান্টনারের দ্বিতীয় শিকার হন শাহাদাত। ১১ বলে ৪ রান করে এলবিডব্লিউ হন এই ডানহাতি।

ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ মিরাজও। মাত্র ৩ রান করে অ্যাজাজের বলে ক্যাচ তুলে দেন এই ডানহাতি ব্যাটার। নুরুল হাসান সোহান বরাবরের মতোই ব্যর্থ। এদিন তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ডাক মেরে অ্যাজাজের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি।

নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৬ উইকেট শিকার করেন অ্যাজাজ প্যাটেল। ৩টি উইকেট শিকার করেন মিচেল স্যান্টনার। ১টি উইকেট তুলে নেন টিম সাউদি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *