আ.লীগের লিফলেট বিতরণকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে: প্রেস সচিব

রাজনীতি

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, লিফলেট বিতরণকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসর ও সাঙ্গপাঙ্গরা অনেক কিছু করতে চাচ্ছেন। তারা লিফলেট বিতরণ করতে চাচ্ছেন। যারা লিফলেট বিতরণ করবেন তাদের জন্য কড়া বার্তা হল- তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। লিফলেটের যেসব কথা আছে, তা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে হুমকিতে ফেলার কথা। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ, সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।

আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা অনলাইনে মিথ্যা ও গুজব ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, পতিত স্বৈরাচারকে বলছেন এখনো প্রধানমন্ত্রী। পুরোটা আমরা মনিটরিং করছি। আমাদের কড়া বার্তা হচ্ছে যারা লিফলেট বিতরণ করবে, এ ধরণের কর্মসূচিতে যাবেন তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। আইনের আওতায় আনা হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে একজন শিক্ষা ক্যাডার (মুকিব খান) লিফলেট বিতরণ করেছেন। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা বেশ কিছু গ্রেপ্তার করেছি। আমরা শুনেছিলাম তারা ঢাকায় ৭০টি জায়গায় লিফলেট বিতরণ করবে। কিন্তু আমরা জেনেছি তিনটা জায়গায় তারা তা করতে চেষ্টা করেছিল, সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা অনলাইনে অনেক কিছু বিতরণ করছে। পালিয়ে গিয়ে এ-ওকে দেয়। ওনাদের কাজই হচ্ছে অনলাইনে। চুরির টাকাতো তাদের ব্যয় করতে হবে। শিক্ষা ক্যাডারের বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ওনার ফেসবুক স্ট্যাটাসগুলো খতিয়ে দেখছি। প্রত্যেকটা বিষয় খতিয়ে দেখছি।

গুজব প্রতিরোধে সরকার সাইবার সেল করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, গুজব নিয়ে ফেসবুকের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। গুজব নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো আমাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা যুদ্ধে নেমেছে। প্রতিদিন তারা মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। আমাদের ধারণা হচ্ছে পতিত স্বৈরাচারের যারা বিলিয়ন ডলার বাইরে নিয়ে গেছে, তারা এ কাজগুলো করাচ্ছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান করেন তিনি। একই সঙ্গে বিষয়টি ভারত সরকারকেও জানানো হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব।

বইমেলার শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ডাস্টবিনের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, এটাকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের ট্রল বাহিনী খুবই ন্যাক্কারজনকভাবে আমার পরিবারকে টার্গেট করেছে। আমরা জানি তাদের চরিত্র কেমন। অপ্র্যাতাশিত হলেও সত্য তাদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বৈঠকও করছেন। বাংলাদেশের কসাইয়ের রুচিটা কোথায়, দেখেন। শেখ হাসিনা এ-টিমের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এ-টিম কারও মেয়ের ছবির উপরের গলাটা কেটে পর্নোগ্রাফি ছবি দিয়ে দিচ্ছে। কি ভয়ংকর! তার রুচিটা কোথায় গেছে! আবার আমাদের রুচি শেখান অনেকেই।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের অবস্থান শিক্ষা উপদেষ্টা স্পষ্ট করেছেন বলে জানিয়েছেন উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, ‘সরকার ওই সিদ্ধান্তে অটল আছে। নতুন করে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

সরকার তাদের আন্দোলনের কারণে মানুষের যে দুর্ভোগ হচ্ছে তা নিয়ে সচেতন আছে বলেও জানান আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, তাদের প্রতি অনুরোধ তারা যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করে। তাদের কোন দাবি-দাওয়া থাকলে এ বিষয়ে জনমত গড়ে তুলুক, কথা বলুক, লেখা লেখি করুক। যদি জনমত তৈরির মাধ্যমে দাবিটি প্রতিষ্ঠিত করতে পারে তাহলে ভবিষ্যতে সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে। সরকারে থেকে তাদের প্রতি আহ্বান তারা যেন সড়ক বন্ধ করে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি না করে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহতের আন্দোলনের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আজাদ মজুমদার বলেন, তাদের বিষয়ে সরকার আন্তরিক। তারপরও কারও কারও মধ্যে হতাশা ও অস্থিরতা কাজ করছে। তাদের বিষয়ে সরকার সচেতন আছে। তাদের সুচিকিৎসা দেওয়ার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

মানব পাচার বন্ধে সরকারের অনেকগুলো সেল কাজ করছে বলে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, সরকারের নিবিড় পর্যবেক্ষণের পরেও এ ধরণের কাজ হয়ে যায়। আমরা এটাকে আরও স্টেপআপ করার চেষ্টা করছি। যাতে বাংলাদেশ থেকে কোনোভাবে মানবপাচার না হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *