দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি করা হয় ইলিশ মাছ। তবে এবার তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় দেশটির ব্যবসায়ীরা ইলিশ চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদন বলছে, গত ৫ বছর ধরে ইলিশ আমদানি হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। এবারও সেই রীতি মেনে ভারতে ইলিশ পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে আবেদন করেছে ফিস ইমপোর্টার অ্য়াসোসিয়েশন।
তবে প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট কারও বক্তব্য প্রকাশ করা হয়নি। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষেও এখনও পর্যন্ত কোনো মন্তব্য আসেনি।
প্রতিবেদন বলছে, প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাংলাদেশ থেকে ইলিশ যায় ভারতে। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরা ও আসামেও যায় বাংলাদেশের ইলিশ। গত বছরও ১৩০০ টন ইলিশ যায় বাংলাদেশ থেকে। তবে এবার কতটা ইলিশ যাবে, আদৌ যাবে কি না তা নিয়ে এখনও কোনও নিশ্চয়তা মেলেনি।
হিন্দুস্তান টাইমসের তথ্য বলছে, দাম যতই বেশি হোক অনেকেই বাংলাদেশের ইলিশ কিনে থাকেন। অনেকের কাছে বাংলাদেশের ইলিশ ছাড়া যেন উৎসব সম্পূর্ণ হয় না। অনেকে আবার যাঁরা শেকড় ছিঁড়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছিলেন তাঁদের কাছে এই পদ্মার ইলিশ যেন কিছুক্ষণের জন্য ফেলে আসা ভিটে মাটির সোঁদা গন্ধ বয়ে আনে।
এবার প্রশ্ন ইলিশ যাবে কি না বাংলাদেশ থেকে? কতটা ইলিশ যাবে? সেই ইলিশের দাম কি মধ্য়বিত্তের নাগালের মধ্যে থাকবে? পূজার আগে যাবে নাকি তার দিনের কোনও পরিবর্তন হবে? এসব প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে গোটা বিষয়টিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর পর ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এ অবস্থায় ১১ আগস্ট দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপর ইলিশ মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হবে বলে জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। স্বল্প আয়ের মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়া ইলিশ মাছের দাম নাগালের মধ্যে নিয়ে আসারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করা হবে কি না, প্রশ্ন করলে ওইদিন তিনি বলেন, দেশের মানুষ যাতে ইলিশ মাছ পায় এবং দাম কমে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। দেশের মানুষ ইলিশ পাবে না, আর রপ্তানি হবে সেটা হতে পারে না।
শেয়ার করুন