
দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে ৯ জন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান,পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। এ ছাড়া বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে) খোদা বকশ চৌধুরী, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।প্রেস সচিব বলেন, গত কিছুদিনে কিছু ঘটনার ঘটেছে, তার আলোকে এই বৈঠক হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল বের হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ঝটিকা মিছিলসহ বেআইনি সমাবেশের বিষয়ে মনিটরিং জোরদারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর নেপথ্যে যারা সক্রিয় রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যাতে নিজেদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখে এবং নির্বাচন ঘিরে যাতে কোথাও কোনো ধরনের নিরাপত্তাজনিত ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আরও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে জোর দেন।
শফিকুল আলম বলেন, দেশ যখন নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে এবং জুলাইয়ের হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়া যখন দ্রুত এগোচ্ছে, তখন পতিত পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি মরিয়া ও বেপরোয়া হয়ে পড়ছে। তারা দেশের সার্বিক শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে এবং গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে সব শক্তি নিয়ে মাঠে নামছে। বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এটা এখন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নয়, জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ক্রমাগতভাবে নিরাপত্তা পরিস্থিতি মনিটর করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনকে আগাম প্রস্তুতি রাখতে হবে। এর পাশাপাশি ডাকসু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে হয় সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সম্প্রতি রাজবাড়ীর ঘটনার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, এ পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই সাতজনের মধ্যে অন্তত দুজন স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, যারাই এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর।
শেয়ার করুন