একই অর্জনে ‘দ্বিমুখী আচরণে’ সিলেট আওয়ামী লীগ!

সিলেট

এক সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে দাপুটে অবস্থান ছিল সিলেটের নেতাদের। আবদুস সামাদ আজাদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, দেওয়ান ফরিদ গাজী ও হুমায়ূন রশিদ চৌধুরীর মতো প্রভাবশালী নেতারা নেতৃত্ব দিয়েছেন কেন্দ্রে। ধীরে ধীরে সেই অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে।

সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে সিলেট বিভাগের মাত্র তিন নেতার স্থান হয়েছে। পুনরায় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছেন সৈয়দা জেবুন্নেছা হক। আর আগের কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদের ঠাঁই হয়েছে এবার উপদেষ্টা পরিষদে।

তবে সিলেটে দুই নেতা ও এক নেত্রী কেন্দ্রের নেতৃত্বে জায়গা পেলেও সিলেট আওয়ামী লীগ একপেষে নীতিতে চলছে। এতে তৃণমূলে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরী হয়েছে।

সদ্যঘোষিত সম্মেলনের আংশিক কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচিত হবার সিলেটের তৃণমূলে বাধঁভাঙ্গা উল্লাস দেখা গেছে। নাদেল একসময় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবকল্যান বিষয়ক সম্পাদক, পরে মহানগরে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব সফলতার সঙ্গে পালন করেন।

নাদেল কেন্দ্রীয় কমিটি ফের নির্বাচিত হবার পর সিলেটের বিভিন্ন মহলে আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখা গেলেও অনেকটা এক পেশে নীতি অবলম্বন করেছে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। গেল ২৭ ডিসেম্বর সাবেক ছাত্রনেতা নাদেল যখন সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান সেখানে শুভেচ্ছা জানাতে তৃণমূল নেতৃবৃন্দসহ সুধীজন উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক কেউই। এমনকি সামাজিক মাধ্যমেও শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায়নি তাদের।

এদিকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে নুরুল ইসলাম নাহিদের ঠাঁই না হলেও এই পদে নতুন নির্বাচিত সৈয়দা জেবুন্নেছা হককে তাৎক্ষণিক ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দীন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। জেবুন্নেছা সাবেক সংরক্ষিত আসনের সাংসদ এবং সিলেটের আন্দোলন সংগ্রামে সরব উপস্থিতি ছিলো।

সিলেটের সুধীসমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, জেবুন্নেছা ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবার দেশের প্রাচীণতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাচিত হওয়া সিলেট অঞ্চলের জন্য গর্বের। তাঁরা এই দলে সিলেটের প্রতিনিধিত্ব করবেন। কিন্তু সিলেটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের একপেশে নীতি যেমন দলে কোন্দল বাড়াবে তেমন করে সিলেটের অর্জনে তারা খুশি নন এমনটাই আভাস দিলেন। যা রাজনীতির জন্য সুখকর নয়।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যম শারীর পদধারী এক নেতা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে প্রকাশ্যে শুভেচ্ছা না জানানোর জন্য অনেক সমালোচনা হচ্ছে। এটা সিলেটের আওয়ামী রাজনীতির জন্য ভালো লক্ষন নয়। যেখানে দলের প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা উনাকে দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচিত করেছেন সেখানে আমাদের কৃপণতা লজ্জাজনক।

আর সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, সিলেটের যে সকল নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের প্রত্যাককে অভিনন্দন জানিয়েছি। জেবুন্নেছাকে সিলেট ও শফিউল আলম নাদেল সাহেবকে ঢাকায় গণভবনে অভিনন্দন জানিয়েছি মহানগরের পক্ষ থেকে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *