গেল প্রায় এক দশকে এবারই সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক রমজানের বাজার দেখা যাচ্ছে। বেশিরভাগ পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও কিছু পণ্য গেল বছরের তুলনায় অনেক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে গাজর, টমেটো, মরিচ ও পেঁয়াজের দাম অর্ধেকেরও কম। রমজান শুরুর পর কমেছে ছোলা, চিনি ও বেগুনের দামও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে পণ্যের সরবরাহ বৃদ্ধি, সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য রোধ এবং চাঁদাবাজি কমে আসার ফলে এবারের বাজার স্বস্তিদায়ক হয়েছে।
গত বছর রমজানে প্রতি কেজি টমেটো ও গাজরের দাম ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, যা এবার মাত্র ২৫ থেকে ৩০ টাকায় নেমে এসেছে। ২২০ টাকার বেগুন এখন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মরিচের দামও চার ভাগের এক ভাগ কমেছে।
বাজার বিশ্লেষক এম. এস. সিদ্দিকি জানান, “রমজানকে সামনে রেখে পণ্যের সরবরাহ ও আমদানি ৩৫% বেড়েছে। একই সঙ্গে মুদ্রা সংকোচনের কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বাজারে টাকার সঞ্চালনও কমে গেছে।”
রাজধানীর বাজারগুলো স্বস্তিদায়ক থাকলেও কৃষকরা পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। বগুড়া ও টাঙ্গাইলের চাষিরা জানিয়েছেন, এবার খুব বেশি লাভ না হলেও ক্ষতির সম্মুখীন হননি।
একজন কৃষক বলেন, “যেটুকু দাম পাচ্ছি, আরও বেশি হলে ভালো লাগত। তবে আল্লাহর রহমতে কিছু লাভ থাকছে। এক বস্তা লেবু (১১০ কেজি) আগে ১০,০০০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন ১১,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, কৃষক ও ভোক্তার মধ্যে দূরত্ব কমাতে হবে। কৃষক যেন তার উৎপাদিত পণ্যের প্রকৃত মূল্য পায়, সে জন্য সরাসরি কৃষকদের বাজার ব্যবস্থার উন্নয়ন করা জরুরি। বড় শহরগুলোর প্রবেশপথ ও মাঝামাঝি এলাকাগুলোতে কৃষকদের জন্য বিশেষ বাজার চালু করার প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।
রমজানের পাশাপাশি সারা বছরের জন্য টেকসই বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে বীজ ও সারে ভর্তুকি এবং বাজার মনিটরিং বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
শেয়ার করুন