দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত এলাকা সিলেট। এখানকার হাওর, পাহাড়, ঝর্ণা, নদী দেখতে সারাবছরই ভিড় করেন পর্যটকরা। আর কোন উৎসব বা দীর্ঘ ছুটিতে রীতিমত পর্যটকদের ঢল নামে। হোটেল-রিসোর্টগুলোতে রুমই খালি পাওয়া যায় না। তবে এবারের ঈদে একেবারে বিপরীত চিত্র। এবার সিলেটে হোটেল মোটেলগুলোতে আগাম বুকিং হয়নি তেমন।
ফলে এবার ঈদের ছুটিতে সিলেটে পর্যটক সমাগহম নিয়ে শঙ্কিত এই খাত সংশ্লিস্টরা। তাদের মতে, সাধারণ মানুষের হাতে এখন তেমন টাকা নেই। তাই তারা ঘুরতে বের হচ্ছেন না। আর যে শ্রেনির হাতে টাকা আছে তাদের বেশিরভাগ বেড়াতে দেশের বাইরে চলে যান।
এছাড়া ঈদের ছুটির বেশিরভাগ অংশ ঈদের আগেই শেষ হয়ে যাওয়ায় এবার পর্যটক সমাগম আশানুরুপ না হওয়ার শঙ্কা তাদের।
তবে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের বরণ করে নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রস্তুত হচ্ছে পর্যটনকেন্দ্রগুলো। সিলেটের প্রধানতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলং। জাফলংকে বলা হয় প্রকৃতি কন্যা। ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়, ঝর্ণা ও পাহাড় থেকে নেমে আসা নদী, খাসিয়া পল্লী দেখতে সবসময়ই ভিড় করেন পর্যটকরা।
জাফলংয়ের গুচ্ছগ্রাম এলাকার গ্রিন ভিউ রিসোর্টের সত্ত্বাধিকারী বাবুল আহমদ বলেন, প্রতিবছর ঈদ বা বড় ছুটিতে আগে থেকেই আমাদের সব কক্ষ বুকিং হয়ে যায়। তবে এবার তেমন একটা বুকিং হয়নি। তবু আমরা ঈদে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছি। পুরো রিসোর্ট নতুনভাবে সাজিয়েছি।
এবার পর্যটকদের আগাম বুকিং নেই বলে জানিয়েছেন নগরে জিন্দাবাজার এলাকার হোটেল গোল্ডেন সিটির ব্যবস্থাপক মিষ্ঠু দত্তও।
তিনি বলেন, সারাবছরই আমরা ঈদের জন্য অপেক্ষায় থাকি। এই সময়ে সবচেয়ে ভালো ব্যবসা হয়। কিন্তু এবার পর্যটকদের তেমন সাড়া নেই। ঈদের পর কিছু পর্যটক আসতে পারেন। তবে আগের মতো হবে বলে মনে হয় না।
সিলেটের সবচেয়ে বেশি পর্যটন কেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলায়। জাফলং ছাড়াও দেশের দুর্লভ জলারবন রাতারগুল, পাথরের বিছানা বিছানো বিছনাকান্দি, স্বচ্ছজলের লালাখাল, পাহাড়ি ঝর্ণার পাংথুমাইয়ের অবস্থান এই উপজেলায়ই।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন, ঈদে পর্যটকদের বরণ করে নিতে পর্যটনকেন্দ্রগুলোকে প্রস্তুত। সবগুলো পর্যটনকেন্দ্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায়ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পর্যটকরা যাতে বেড়াতে এসে হয়রানির শিকার না হন সেব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ঈদের ছুটিতে পর্যটক সমাগম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে সিলেটের হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমাত নুরী জুয়েল বলেন, মানুষজনের হাতে এবার টাকা নেই। তাছাড়া সবকিছুর দাম বেড়েছে। ভ্রমণ খরচও অনেকে বেড়ে গেছে। এছাড়া এবার ঈদের পরে তেমন ছুটি নেই। তাই এই ঈদে পর্যটকদের তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তবু আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। আশা করছি, আগের মতো না হলেও কিছু পর্যটক আসবেন।
শেয়ার করুন